শিরোনাম:

লন্ডন সফরের রাজনৈতিক ভালো-মন্দ

লন্ডন সফরের রাজনৈতিক ভালো-মন্দ

ড. ইউনূস-তারেক রহমান বৈঠক কতটা আলোকিত হবে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে তা বোধগম্য হবে আগামী বছরের শুরুতে। যদিও দেশটাকে কেউ কেউ ব্যবাসীয়ক কাজে বা ব্যক্তিগত উন্নয়নের কাজে ব্যবহারের যে সিলসিলা চালু করেছেন, তা থেকে কতটা সরবে তা তাও প্রমাণ হবে আগামী বছরের শুরুতেই। এমন একটা বিষয় সামনে আসার পর অনেকেই ভাবছেন- প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেড় ঘণ্টার বৈঠক ইতিবাচক। এখন প্রশ্ন হলো- কি কারণে কৃষি বিপ্লবের নায়ক, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সন্তানকে দেশে আসার সুযোগ গড়ে না দিয়ে সরকারি খরচে হারমোনি পুরস্কার গ্রহণ উপলক্ষে ৪ দিনের সফরে গিয়ে লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে ৯০ মিনিটের এই বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকার ও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে সৃষ্ট সংকট বা আস্থার ঘাটতি কাটবে বলে ভাবলেও তারও প্রমাণ পাওয়া যাবে আগামী বছরের শুরুতেই।

কেন বলছি এমন কথা? কারণ অনেকগুলো বিষয় সামনে এসেছে ছাত্রদের সরকার বা অর্ন্তবর্তী সরকারের ৩৭ প্রতিনিধি নিয়ে লন্ডন সফরকে কেন্দ্র করে। তবে কেউ কেউ আন্দাজে ঢিল মারার মত করে বলছেন- আলোচনা হওয়াটাই তো ইতিবাচক বিষয়। ফলে এই বৈঠক অবশ্যই ইতিবাচক। এছাড়া তারা (সরকার) তো নির্বাচন নিয়ে তাদের অবস্থান থেকে পিছিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে। কারণ প্রথমে তিনি জুনে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। পরে আবার বলেছেন এপ্রিলের কথা। এখন বলছেন, সংস্কার শেষ হলে আর বিচার দৃশ্যমান করতে পারলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিতে উনার কোনো আপত্তি নেই। এটা একটা ভালো উদ্যোগ। আর নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করার কারণে ভুল বোঝাবুঝিও হয়তো কেটে গেছে। তাদের আলোচনার সবকিছু তো আমরা জানতে পারব না। তবে যতটুকু সামনে এসেছে এটা ইতিবাচক। আমরা তো আগে থেকেই বলে আসছি বিচার সব কাজ সম্পূর্ণ করা সময়সাপেক্ষ।

তবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় একজন কর্মী হিসেবে বলতে পারি- এটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। সংস্কারও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ফলে প্রধান সংস্কার কাজ যদি শেষ করা যায় বা একমত হলে তো নির্বাচন করতে কোনো সমস্যা নেই। তাছাড়া সংস্কার বাস্তবায়ন তো এই সরকারের হাতেও নেই। সংস্কার একটি পলিসিগত দিক। ফলে সেগুলো নিয়ে ঐকমত্য হলে তো ফেব্রুয়ারির দরকার নেই। এটা আগামী মাসেও হতে পারে। আর এটা যদি হয়ে যায়, বিচারের কিছু কাজ যদি দৃশ্যমান হয় তাহলে তো নির্বাচন অনুষ্ঠানে কারও কোনো আপত্তি নেই। তাছাড়া নির্বাচনকে কোনোভাবেই সংস্কার ও বিচারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া ঠিক হবে না। এমন কথার সাথে একমত হোক বা না হোক, আমি মনে করি এটাই বাস্তবতা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ের লন্ডন সফরকে কেন্দ্র করে যারা বলছেন- এটা তো পরিষ্কার সরকার ও বিএনপির মধ্যে কিছুটা টেনশন তৈরি হয়েছিল। ফলে তারা যখন বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেটাই ইতিবাচক ছিল। আমাদের এই শক্তি যদি পরস্পরের সঙ্গে ফাইট করতে থাকে তাহলে দেশে অস্থিরতা তৈরি হওয়া ছাড়া কোনো লাভ হবে না। দুপক্ষই এটা বুঝতে পেরেছে। তারা বসেছেন, পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আমার ধারণা দুপক্ষই একে অন্যের কিছু দাবি মেনেও নিয়েছেন। নির্বাচন নিয়ে তারা একটি মাঝামাঝি জায়গায় এসেছেন।

তাদেরকে উদ্দেশ্য করে আমার বক্তব্য হলো- এই মাঝামাঝি যদি দেশকে ফেলে রেখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়, তখন কি হবে? সেই প্রশ্নের উত্তর কি আপনাদের কাছে আছে? নিশ্চয়-ই নেই। কারণ- আমরা রাজনীতিকদের মত করে এখন অর্ন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টাদেরও সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত দেখছি। যেমন- নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে কিন্তু এনসিপি প্রশ্ন তুলছে। এখন নির্বাচন কমিশন একটা শিডিউল দিলে সেটা তারা মানল না। বাজে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

দেশের মানুষ এই ধরনের একটা বৈঠক প্রত্যাশা করেছিল। এমন একটা পরিস্থিতিতে মনে রাখতে হবে- অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অরাজনৈতিক। তারা যে কোনো সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নেবেন-এটাই আমাদের প্রত্যাশা। ফলে এই ধরনের বৈঠক হওয়া ভালো। এছাড়া এই বৈঠকটি তিনি (ড. ইউনূস) এমন একটা সময়ে করলেন যখন নির্বাচনের তারিখ নিয়ে একটা সংকট চলছিল। বিএনপি আগেই বলেছিল তারা ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়। আর ড. ইউনূস ঘোষণা করেছিলেন নির্বাচন হবে এপ্রিলের প্রথমার্ধে। ফলে এই বিরোধ নিয়ে এই ধরনের বৈঠক খুব কার্যকর হতে পারে।

এখন আসুন দেখি কিভাবে বাংলাদেশ থেকে বিলেত গিয়ে ৩৭ প্রতিনিধির ইউনূস সরকার কি বৈঠক করলেন। বৈঠকটা শুরু হয়েছিল হাসিমুখে, যার শেষও হয় সেই হাসিতে। সবার মুখে বিজয়ের শেষ হাসি। প্রত্যাশিত সমঝোতায় সফল হলো প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বহুল আলোচিত শুক্রবারের লন্ডন বৈঠক। বৈঠক শেষে দুই পক্ষের যৌথ বিবৃতি ও ব্রিফিং বলে দিচ্ছে- সবাই জিতেছে। হারেনি কেউ। জয় হয়েছে বাংলাদেশের। শেষ হলো টানটান উত্তেজনার। হাঁফ ছেড়ে বাঁচল পুরো জাতি। অবসান হলো সব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার। জাতীয় নির্বাচন রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেই হচ্ছে। বিস্তারিত ঘোষণাটা আসবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।

শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে জীবন বিসর্জন দেওয়া জাতীয় বীরদের প্রতি। একইভাবে স্মরণ করা হয়েছে কাক্সিক্ষত গণতন্ত্রের জন্য যারা বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জীবনদানসহ নানাভাবে ত্যাগ স্বীকার করেছেন-তাদের প্রতি। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। বৈঠক শেষে ব্রিফিং থেকে আরও বলা হয়, সংস্কার ও বিচার একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচনের আগে ও পরেও এটি অব্যাহত থাকবে। বৈঠকের আলোচনা ও সার্থকতা নিয়ে উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে বিএনপি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, বৈঠক সফল, জাতিকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখালেন দুই নেতা। এছাড়া দু-একটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সব দলই বৈঠককে ইতিবাচক আখ্যা দিয়ে বলেছে, নির্বাচন নিয়ে আর কোনো সংকট নেই, সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকটও কেটে গেছে।’

গত বছরের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এটি অর্ন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে প্রথম বৈঠক। আলোচনা কক্ষে প্রবেশের সময় তারেক রহমান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ তার সঙ্গে আসা অন্যদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমান হাসিমুখে করমর্দন করেন। প্রধান উপদেষ্টা তারেক রহমানকে বলেন, খুব ভালো লাগছে। তারেক রহমানও বলেন, আমার কাছেও খুব ভালো লাগছে।

আপনার শরীর কেমন? উত্তরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চলছে, টাইনাটুইনা চলতে হয়। এ সময় তারেক রহমান বলেন, আম্মা (বেগম খালেদা জিয়া) আপনাকে সালাম জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, উনি অসাধারণ মানুষ, অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। বৈঠক শেষে দুই পক্ষ থেকে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন, ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন যে, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন।

সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার এ অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং দলের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানান। প্রধান উপদেষ্টাও তারেক রহমানকে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান। এই ধন্যবাদের রাজনৈতিক পথচলায় আমরা কি পেয়েছি, পেতে যাচ্ছি? চলুন সেই দিকে দৃষ্টি দেই। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের সন্তুষ্টির কথা জানান। বৈঠক-পরবর্তী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বৈঠকের আলোচনায় তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন। বিকাল চারটার দিকে ওই হোটেলেই যৌথ সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে কথা বলেন খলিলুর রহমান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন। নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খলিলুর রহমান বলেন, সঠিক তারিখ নির্ধারণে আমরা কোনো সমস্যা দেখছি না। কেউ দেখলে তা ভুল দেখছেন। নির্বাচন কমিশন শিগগিরই একটা তারিখ ঘোষণা করবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জুলাই সনদ নিয়ে আলোচনা চলছে। এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত আসছে ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ হবে। সংস্কারের ব্যাপারেও একই, ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কারও করব। আমি নিশ্চিত খুব কম সময়ের মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত দিতে পারব।

স্বাভাবিকভাবে ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে যে সিদ্ধান্ত হবে, স্বাক্ষর তো হবেই, না হওয়ার তো কোনো কারণ নেই। সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আমির খসরু বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সামনের দিকে এগোচ্ছি। সবাই চায় দেশ গড়ার যে প্রত্যয় আমরা নিয়েছি, ঐক্যবদ্ধভাবে সেই কাজটি করব। শুধু নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচনের পরেও বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আমরা যে সবাই ঐকমত্য হয়েছি, তা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সংস্কার প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, এটা তো পরিষ্কার। এখানে না বোঝার কোনো কারণ নেই। সংস্কার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা, তারেক রহমান-আমরা সবাই একই কথা বলেছি, যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হবে সেগুলোই সংস্কার হবে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এমন নয় যে, আজ সব সংস্কার শেষ হয়ে যাবে। নির্বাচনের আগেও ঐকমত্যের ভিত্তিতে কিছু সংস্কার হবে, নির্বাচনের পরেও সংস্কার অব্যাহত থাকবে।

কারণ আমরা যে দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েছি, সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা সবাই অনুভব করছি। সুতরাং আগে-পরে সংস্কার চলতে থাকবে। তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, এ ব্যাপারে আলোচনার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমরা মনে করি না। তারেক রহমান যখন ইচ্ছা, উনি দেশে ফিরে যেতে পারবেন। সুতরাং সময়মতো এ বিষয়ে উনি সিদ্ধান্ত নেবেন। বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে খলিলুর রহমান বলেন, সংস্কার ও বিচার-দুই বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতির কথা বলা হয়েছে। আমরা মোটামুটি কনফিডেন্ট এই অগ্রগতি নির্বাচনের আগেই দেখতে পারব। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সবাইকে নিয়েই নির্বাচনে যেতে চাই।

কতটা সত্য আর কতটা মিথ্যে, তার প্রমাণ দেশবাসী দেখার অপেক্ষায় থাকলেও তাদের অপেক্ষার প্রতিটি প্রহরে রয়েছে শঙ্কা। কারণ, সয়াবিন তেল থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি দমাতে ব্যর্থ হয়েছে অর্ন্তবর্তী সরকার। যদিও এরই মধ্যে ৪ দিনের লন্ডন সফরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পেয়েছেন চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশেষ উপহার একটি কলম ও গ্রেটা থুনবার্গের ‘নো ওয়ান ইস টু স্মল টু মেক অ্যা ডিফারেন্স’ এবং ‘নেচার ম্যাটারস’।

বর্তমান পরিস্থিতিতে থুনবার্গের ‘নো ওয়ান ইস টু স্মল টু মেক অ্যা ডিফারেন্স’ বইটি প্রধান উপদেষ্টাকে কেন দিয়েছেন তারেক রহমান? আছে কোনো রহস্য। চলুন জেনে আসি সেই বইতে কি আছে। গ্রেটা থুনবার্গের ‘নো ওয়ান ইস টু স্মল টু মেক অ্যা ডিফারেন্স’ একটি শক্তিশালী, রাজনৈতিক ও পরিবেশ সচেতনতামূলক বক্তৃতাসংকলন যা বিশ্বজুড়ে তরুণ-তরুণীসহ সকল শ্রেণির পাঠকের মাঝে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

২০১৯ সালের ৩০ মে প্রকাশিত বইটি মূলত পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বক্তৃতা ও প্রবন্ধের সংকলন। বইয়ের প্রতিটি অধ্যায় একটি করে বক্তৃতা, যেগুলো তিনি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় দিয়েছেন। এতে রয়েছে জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট, ব্রিটিশ পার্লামেন্টসহ অনেক জায়গার বক্তৃতা। গ্রেটা বারবার বলেছেন, আমরা এখন এক ‘জলবায়ু সংকটের’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছি এবং এটি শুধুই ভবিষ্যতের ব্যাপার নয়—এটি এখন আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। তিনি কড়া ভাষায় বিশ্বনেতাদের, কর্পোরেটদের এবং নীতিনির্ধারকদের সমালোচনা করেন, যারা জলবায়ু ইস্যুতে সময়ক্ষেপণ করছেন।
সময়ক্ষেপনের হাত থেকে বাঁচার ও বাঁচানোর আকুতি তারেক রহমান সরাসরি বলেননি ঠিকই, কিন্তু প্রধান উপদেষ্টাকে উপহার দেয়া গ্রেটা থুনবার্গের ‘নো ওয়ান ইস টু স্মল টু মেক অ্যা ডিফারেন্স’ বলছে প্রতিটি পদে পদে। যা আমাদেরও কথা…

এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করলে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

লন্ডন সফরের রাজনৈতিক ভালো-মন্দ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানকে অপসারণ করা না হলে আগামী শনিবার (২৮ জুন) থেকে রাজস্ব বোর্ডের সব দপ্তর লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছে সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকা এই ঘোষণা দেন।

আবদুর রহমানকে আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী আমলা আখ্যা দিয়ে মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও সেহেলা সিদ্দিকা বলেন, দেশ ও রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে আবদুর রহমান খান। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এনবিআরের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।

তারা বলেন, ইতোমধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবির এই আন্দোলনকে বাধা দিতে গতকাল রোববার আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়। এর মধ্যে দুজন আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের, একজন এনবিআর বোর্ড অফিসের এবং বাকি দুজন ঢাকা ও কুমিল্লা কর অঞ্চলের। এ ধরনের বদলির তীব্র নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে আন্দোলনের থামাতো এই ধরনের বদলি বন্ধেরও দাবি করেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনবিআরের প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ আজ সোমবারের মধ্যে বাতিল না করা হলে আগামীকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকাস্থ কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলমবিরতি এবং ঢাকার বাইরে নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি, কলমবিরতি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে। এছাড়া প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ বাতিল না করা হলে এবং এ ধরনের নতুন কোনো বদলি আদেশ জারি করা হলে আগামী ২৫ ও ২৬ জুন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে কলমবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ জুনের মধ্যে এসব বদলি আদেশ বাতিল না হলে ২৮ জুন থেকে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়করের সব দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন চলবে বলা হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাফনের কাপড় পরে তিনঘণ্টা (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত) কলম বিরতিরসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। এসময় সংস্থাটির বিভক্ত করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ তৈরিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিত্ব রাখার জোরদাবি রাখেন। কর্মসূচিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছে, অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এনবিআর চেয়ারম্যানকে রাজস্ব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণাটি থাকবে।

গত মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচিতে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পরে কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি বজায় রাখেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফেরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি স্বাভাবিক কাজে ফিরলেও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কোনো কর্মসূচি নেওয়া হলেও তাদেরকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুন্ডু

লন্ডন সফরের রাজনৈতিক ভালো-মন্দ

রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুণ্ডু। মাত্র ৬ বছর বয়সেই তিনি পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার (মুজিবনগর কর্মচারী) সনদ! ওই সনদে তিনি চাকরি করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার জন্মসনদ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ছিলেন ৬ বছরের শিশু। প্রকৃতপক্ষে ‘মুজিবনগর কর্মচারীর’ জাল সনদ দিয়ে এখন পর্যন্ত সাবরেজিস্ট্রার পদে চাকরি করে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তার পথ ধরেই দেশে এখন ৩৯ জন সাবরেজিস্ট্রার বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কর্মরত আছেন। এই চাকরির সুবাদে রামজীবন কুণ্ডু কয়েক কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ করেছেন বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সংসদ-সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ সেনের ভাগ্নি জামাতা বলে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ের সূত্রে এবং রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। প্রতিটি দলিল সম্পাদনের জন্য তাকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ঘুস দিতে হতো। রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে প্রতিদিন এক থেকে দুই শতাধিক দলিল রেজিস্ট্রি হয়। এতে দেখা যায় তিনি প্রতিদিন দলিল সম্পাদন বাবদ প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা ঘুস নিতেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার সহকর্মীরা জানান, তিনি রংপুর নগরীর আরএমসি মার্কেটের সামনে ৮ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার ওপরে। রাজারহাটে নিজ গ্রামে জমি কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার বেশি। ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। রংপুর ধাপ চেকপোস্ট সড়কে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। নামে-বেনামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

প্রতিদিন সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ঘুসের টাকা বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য রনি নামে একজনকে তিনি তার অফিসে নিজের চেয়ারের পাশে কম্পিউটার দিয়ে বসিয়ে রাখতেন। রনি টাকার হিসাব রাখত। সে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী নয়। বাসা পর্যন্ত ঘুসের টাকা পৌঁছে দিত রনি নিজেই। এজন্য তাকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছেন সাবরেজিস্ট্রার। আর এই সুযোগে রনি নিজেই ধাপ সাগর পাড়ায় ৫ তলা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। তার একাধিক মাইক্রোবাস রয়েছে বলেও জানা গেছে।

জন্ম সদনে রামজীবন কুণ্ডুর জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ১৯৬৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছরেরও কম। এরপরও তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে চাকরি করছেন। তার এই জাল সনদের বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। দেশে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে ২০০৯ সালে ১৯০ জনকে সাবরেজিস্ট্রার পদে আত্তীকরণ করা হয়েছিল উচ্চ আদালতের নির্দেশে। তাদের মধ্যে ১৯৬৮, ১৯৬৭, ১৯৬৬, ১৯৬৫ সালে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরাও ছিলেন। যাদের বয়স মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র ৩ থেকে ৬ বছর ছিল।

জালিয়াতির মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া নিয়ে তখন নিবন্ধন দপ্তরসহ আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। কারণ মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। ওই সরকারের কর্মচারী হতে হলে তাদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে তাদের জন্মসাল হওয়া দরকার ১৯৫২ অথবা তার পূর্বে। কিন্তু নিয়োগ পাওয়াদের সবারই জন্ম তারিখ ছিল ১৯৫৩ সালের পরে। এর মধ্যে ১৩৮ জনের বয়সই ছিল ১০ বছরের নিচে। আর ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সালে জন্ম তারিখ আছে এমন সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৫ জন। মূলত ’৬৪ সালের পর যাদের জন্ম দেখানো হয়েছিল তাদের ৩৯ জনই এখন কর্মরত রয়েছেন এবং আগামী বছর তারা অবসরে যাবেন।

জানা যায়, ২০০৯ সালে মুজিবনগর কর্মচারীর কোটায় সাবরেজিস্ট্রারের চাকরি পাওয়ার আগে রামজীবন কুণ্ডু কুড়িগ্রামের রাজারহাটে একটি প্রাইভেট কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।)

হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্টে ভুল তথ্যের অভিযোগ, দুদকের সতর্ক বার্তা

লন্ডন সফরের রাজনৈতিক ভালো-মন্দ

জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে ভুল ও যাচাইবিহীন তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের দাবি, ওই পোস্টে দুদকের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় দুদক।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি পোস্ট কমিশনের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন।

এ বিষয়ে সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে একটি প্রতারক চক্র দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের কথা বলে প্রতারণা করে আসছে। যার সাথে দুদকের কর্মকর্তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। দুদক ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং প্রতারক চক্রের অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এতে বলা হয়, ইতোপূর্বে দুদক প্রতারণা রোধে সবাইকে সতর্ক করে আসছে, যা বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরূপ প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুদককে দোষারোপ করে যার ফলে দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তির শেষ অংশ দুদক জানায়, প্রতারণামূলক ফোন কল, বার্তা বা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে কারও কাছ থেকে টাকা চাওয়া হলে কিংবা কোনো প্রতারণা বা অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেলে দুদকের টোল ফ্রি হটলাইন-১০৬ নম্বরে জানানোর অথবা নিকটস্থ দুদক কার্যালয় বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।