শিরোনাম:

গফরগাঁওয়ে সরকারী বালু নিয়ে বিরোধ!

ইউএনওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে মানববন্ধন

ইউএনওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে মানববন্ধন

গফরগাঁওয়ে সরকারী বালু নিয়ে বিরোধ! ইউএনওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে মানববন্ধন

ময়মনসিংহের গফরগাঁও ইউএনও ও বিএনপি নেতার বিরোধ বেড়েই চলছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসুচি ঘোষণা। তবে, মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছে উপজেলার সকল সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে গফরগাঁও উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে স্থানীয় সকল সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

স্থানীয় একটি সুত্র জানায়, নিয়মবর্হিভুত ভাবে পাঁচবাগ গলাকাটা মৌজার বিআইডব্লিউটি’র বালু নিতে ইউএনও রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে আসছিল ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম। কিন্তু, ইউএনও নিয়মবর্হিভুত ভাবে বালু দিতে অস্বীকৃতি জানান। এসব নিয়ে ইউএনও’র সাথে বিএনপি নেতার দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ ঘটনায় গত রবিবার সন্ধ্যার পর ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম তার দলীয় কর্মীদের নিয়ে সকালে উপজেলা পরিষদ ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন। এমন সংবাদ পেয়ে উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইউএনওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে মানববন্ধন করার ঘোষণা দেন। পরে সকালে হঠাৎ বিপএনপি নেতা কর্মীরা তাদের কর্মসুচি বাতিল করে। অপরদিকে উপজেলা পরিষদের আয়োজনে স্থানীয় সকল দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্র জানায়, ইউএনও রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হেনস্তার বিরুদ্ধে তারা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমে এসেছেন সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মানববন্ধনে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের সুশৃঙ্খল কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে ইউএনওর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে হেয় করার চেষ্টা চলছে, যা বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ষড়যন্ত্রেরই অংশ। এই ষড়যন্ত্র অবিলম্বে বন্ধ না হলে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

মানববন্ধনে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমির সালমান রনি বলেন, ইউএনও বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঐক্যবদ্ধভাবে আরও কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবেন।

এসময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়েছেন। এই দ্বন্দ্বের কারণে গফরগাঁওয়ের সার্বিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেন নাগরিক সমাজ। তারা আশা প্রকাশ করেন, প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

এবিষয়ে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, আমরা নানাবিধ অনিয়মের কারণে উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসুচি দিয়েছিলাম। এই ইউএনও শেখ হাসিনার সময়ের নিয়োগপ্রাপ্ত একটা ফ্যাসিস্ট। তার কর্মকান্ড অনেকটা ফ্যাসিস্টদের মতই। সে আওয়ামী লীগের সময় যে ভাবে প্রশাসন চালাতো, এখনও ওই ভাবেই প্রশাসন চালায়। তার কাছে কোন পজিটিভ কাজ নিয়ে গেলেও ৭% ঘুষ নেয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পলাতকদের বেতন ভাতা উত্তোলনে সহায়তা করে বিভিন্ন নিয়োগ বানিজ্য করে। উপজেলায় ৪১ টা ইটের ভাটা আছে। যে গুলো থেকে সে টাকা নেয়। সরকারি যে সব সাহায্য আছে কম্বল বিতরণ, ঢেউ টিন বিতরণ, দুম্বার মাংস জনগণকে না দিয়ে কোথায় দেয়, তাও কেউ জানে না। তারপর শহীদ পরিবারের(একজন উত্তরায় ও একজন মাওনা শহীদ হয়ছিলো) লোকজন দেখা করতে গিয়েছিল ইউএনও’র সাথে সাক্ষাত করতে, সে তাদের সাথে অশোভন আচরণ করছে। বেসরকারি যত স্কুল আছে, বেতন উত্তোলন করে এখন উনিই সব কোন কমিটি নেই। উনার একজন পিএস আছে আমিনুল ইসলাম মুক্তা এগুলো থেকে টাকা নেয়। খাদ্য বান্ধব ওএমএস থেকে টাকা নেয় এবং বেশি ভাগ আওয়ামীলীগের লেকজনকেই নিয়োগ দিয়েছে, বিএনপির কিছু লোক ছাড়া। বালি যে বিক্রি হয়, ইউএনও এখন বালী ব্যবসায়ী হয়ে গেছে। এরপর অনেক কারন রয়েছে গত উপজেলা নির্বাচনে নিজেই ফলাফল ঘোষণা করছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়। যেমন বিজয় দিবসসহ এগুলোতে সে কাউকে দাওয়াত দেয় না। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয় এগুলোতে কাউকে পরোয়া করে না এরকম নানাবিধ কারণ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, উপজেলা পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হয়ছিল। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের দলীয় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা এখন প্রশাসনের সাথে কোন বিরোধে যাওয়া যাবে না। প্রশাসন আমাদের আশ্বস্থ করছে উনার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। তাই, আমাদের কর্মসুচি বাতিল করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপি নেতা আলমগীর মাহমুদ আলম সাহেব আমার কাছে কিছু অবৈধ তদবির করছিল, তারমধ্যে ছিল চর আলগী ইউনিয়ন পরিষদটা সরকারী ভবনে না নিয়ে উনার পছন্দ মতন জায়গায় নিয়ে নিতে। কিন্তু সরকারী ভবন রেখে অন্য কোথাও নেওয়া সম্ভব না। তাছাড়া সরকারি ভবনটা ব্যবহারে উপযোগী। আগে ছিল পুরাতন চেয়ারম্যান বাড়ি, সেখান থেকে নিয়ে সরকারী ভবনে আমি শিফট করেছি। এটা উনার তদবির হিসেবে উনার বাড়িতে নিয়ে যাই নাই। উনি বলে আগের চেয়ারম্যান তো তার বাড়িতে নিয়েছিল।আপনি কেন পারবেন না ইউএনও হয়ে আমার বাড়িতে দিতে বা আমার পছন্দ মতন জায়গায় দিতে। আগের চেয়ারম্যানরা তো গায়ের জোরে অনেক কিছু করছে, আমি তো সরকারি কর্মকর্তা, নিয়মের বাইরে আমি পারি না। এটা নিয়ে উনার উপর ক্ষোভ আমার প্রতি। দ্বিতীয়টা হলো, পাঁচবাগ গলাকাটা মৌজার বিআইডব্লিউটি’র বালু আছে। ওই বালু নিয়মবর্হিভুত ভাবে নিতে আমাকে চাপ দেন৷ আমি বলেছি, আমি অকশনে যাবো, আগেও অকশন হয়ছিলো আপনিও অকশনে অংশগ্রহণ করেন।

তিনি আরও বলেন, শুধু আমাকে তো বলছে এমন না। তিনি ডিসি স্যারকেও বিভিন্ন ভাবে চাপ দিয়ে আসছে ওই বালু তাকে দিতে।

এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করলে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

ইউএনওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে মানববন্ধন

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানকে অপসারণ করা না হলে আগামী শনিবার (২৮ জুন) থেকে রাজস্ব বোর্ডের সব দপ্তর লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছে সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকা এই ঘোষণা দেন।

আবদুর রহমানকে আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী আমলা আখ্যা দিয়ে মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও সেহেলা সিদ্দিকা বলেন, দেশ ও রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে আবদুর রহমান খান। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এনবিআরের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।

তারা বলেন, ইতোমধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবির এই আন্দোলনকে বাধা দিতে গতকাল রোববার আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়। এর মধ্যে দুজন আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের, একজন এনবিআর বোর্ড অফিসের এবং বাকি দুজন ঢাকা ও কুমিল্লা কর অঞ্চলের। এ ধরনের বদলির তীব্র নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে আন্দোলনের থামাতো এই ধরনের বদলি বন্ধেরও দাবি করেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনবিআরের প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ আজ সোমবারের মধ্যে বাতিল না করা হলে আগামীকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকাস্থ কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলমবিরতি এবং ঢাকার বাইরে নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি, কলমবিরতি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে। এছাড়া প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ বাতিল না করা হলে এবং এ ধরনের নতুন কোনো বদলি আদেশ জারি করা হলে আগামী ২৫ ও ২৬ জুন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে কলমবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ জুনের মধ্যে এসব বদলি আদেশ বাতিল না হলে ২৮ জুন থেকে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়করের সব দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন চলবে বলা হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাফনের কাপড় পরে তিনঘণ্টা (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত) কলম বিরতিরসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। এসময় সংস্থাটির বিভক্ত করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ তৈরিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিত্ব রাখার জোরদাবি রাখেন। কর্মসূচিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছে, অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এনবিআর চেয়ারম্যানকে রাজস্ব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণাটি থাকবে।

গত মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচিতে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পরে কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি বজায় রাখেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফেরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি স্বাভাবিক কাজে ফিরলেও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কোনো কর্মসূচি নেওয়া হলেও তাদেরকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুন্ডু

ইউএনওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে মানববন্ধন

রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুণ্ডু। মাত্র ৬ বছর বয়সেই তিনি পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার (মুজিবনগর কর্মচারী) সনদ! ওই সনদে তিনি চাকরি করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার জন্মসনদ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ছিলেন ৬ বছরের শিশু। প্রকৃতপক্ষে ‘মুজিবনগর কর্মচারীর’ জাল সনদ দিয়ে এখন পর্যন্ত সাবরেজিস্ট্রার পদে চাকরি করে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তার পথ ধরেই দেশে এখন ৩৯ জন সাবরেজিস্ট্রার বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কর্মরত আছেন। এই চাকরির সুবাদে রামজীবন কুণ্ডু কয়েক কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ করেছেন বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সংসদ-সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ সেনের ভাগ্নি জামাতা বলে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ের সূত্রে এবং রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। প্রতিটি দলিল সম্পাদনের জন্য তাকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ঘুস দিতে হতো। রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে প্রতিদিন এক থেকে দুই শতাধিক দলিল রেজিস্ট্রি হয়। এতে দেখা যায় তিনি প্রতিদিন দলিল সম্পাদন বাবদ প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা ঘুস নিতেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার সহকর্মীরা জানান, তিনি রংপুর নগরীর আরএমসি মার্কেটের সামনে ৮ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার ওপরে। রাজারহাটে নিজ গ্রামে জমি কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার বেশি। ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। রংপুর ধাপ চেকপোস্ট সড়কে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। নামে-বেনামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

প্রতিদিন সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ঘুসের টাকা বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য রনি নামে একজনকে তিনি তার অফিসে নিজের চেয়ারের পাশে কম্পিউটার দিয়ে বসিয়ে রাখতেন। রনি টাকার হিসাব রাখত। সে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী নয়। বাসা পর্যন্ত ঘুসের টাকা পৌঁছে দিত রনি নিজেই। এজন্য তাকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছেন সাবরেজিস্ট্রার। আর এই সুযোগে রনি নিজেই ধাপ সাগর পাড়ায় ৫ তলা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। তার একাধিক মাইক্রোবাস রয়েছে বলেও জানা গেছে।

জন্ম সদনে রামজীবন কুণ্ডুর জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ১৯৬৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছরেরও কম। এরপরও তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে চাকরি করছেন। তার এই জাল সনদের বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। দেশে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে ২০০৯ সালে ১৯০ জনকে সাবরেজিস্ট্রার পদে আত্তীকরণ করা হয়েছিল উচ্চ আদালতের নির্দেশে। তাদের মধ্যে ১৯৬৮, ১৯৬৭, ১৯৬৬, ১৯৬৫ সালে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরাও ছিলেন। যাদের বয়স মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র ৩ থেকে ৬ বছর ছিল।

জালিয়াতির মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া নিয়ে তখন নিবন্ধন দপ্তরসহ আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। কারণ মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। ওই সরকারের কর্মচারী হতে হলে তাদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে তাদের জন্মসাল হওয়া দরকার ১৯৫২ অথবা তার পূর্বে। কিন্তু নিয়োগ পাওয়াদের সবারই জন্ম তারিখ ছিল ১৯৫৩ সালের পরে। এর মধ্যে ১৩৮ জনের বয়সই ছিল ১০ বছরের নিচে। আর ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সালে জন্ম তারিখ আছে এমন সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৫ জন। মূলত ’৬৪ সালের পর যাদের জন্ম দেখানো হয়েছিল তাদের ৩৯ জনই এখন কর্মরত রয়েছেন এবং আগামী বছর তারা অবসরে যাবেন।

জানা যায়, ২০০৯ সালে মুজিবনগর কর্মচারীর কোটায় সাবরেজিস্ট্রারের চাকরি পাওয়ার আগে রামজীবন কুণ্ডু কুড়িগ্রামের রাজারহাটে একটি প্রাইভেট কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।)

হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্টে ভুল তথ্যের অভিযোগ, দুদকের সতর্ক বার্তা

ইউএনওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে মানববন্ধন

জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে ভুল ও যাচাইবিহীন তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের দাবি, ওই পোস্টে দুদকের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় দুদক।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি পোস্ট কমিশনের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন।

এ বিষয়ে সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে একটি প্রতারক চক্র দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের কথা বলে প্রতারণা করে আসছে। যার সাথে দুদকের কর্মকর্তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। দুদক ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং প্রতারক চক্রের অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এতে বলা হয়, ইতোপূর্বে দুদক প্রতারণা রোধে সবাইকে সতর্ক করে আসছে, যা বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরূপ প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুদককে দোষারোপ করে যার ফলে দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তির শেষ অংশ দুদক জানায়, প্রতারণামূলক ফোন কল, বার্তা বা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে কারও কাছ থেকে টাকা চাওয়া হলে কিংবা কোনো প্রতারণা বা অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেলে দুদকের টোল ফ্রি হটলাইন-১০৬ নম্বরে জানানোর অথবা নিকটস্থ দুদক কার্যালয় বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।