শিরোনাম:

ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানে নারীর গর্ভফুল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানে নারীর গর্ভফুল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে অবৈধ ভাবে সংগ্রহীত ৩৫০পিস নারীর গর্ভফুল সহ আন্তঃজেলা নারীর গর্ভফুল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শনিবার (৮-মার্চ) ডিবি পুলিশ জানায়, ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখা(ডিবি) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, কতিপয় ব্যক্তি পিক-আপ গাড়ীযোগে মানবদেহের অঙ্গ-পতঙ্গের অংশ বিশেষ (মহিলাদের গর্ভফুল সাদৃশ্য অংশ বিশেষ) হিমায়িত প্যাকেটজাত করে প্লাষ্টিকের ড্রামে ভর্তি করে ধামরাই, ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টিম গত শুক্রবার (৭-মার্চ) বিকেলে কোতোয়ালী মডেল থানাধীন বলাশপুর হাক্কানীর মোড় ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ এর সামনে থেকে ১টি পিক-আপ গাড়ীটি আটক করেন। পরবর্তীতে গাড়ীটি তল্লাশী করে পলিথিনে মোড়ানো ৩৫০ টি মহিলাদের গর্ভফুল সাদৃশ্য অংশ বিশেষ, ৩টি ক্যাটগার্ডসহ সুই, ১(এক)টি খোলা ইনজেকশনের এ্যাম্পল ও ১টি ব্যবহৃত গ্লাভস উদ্ধার ও ড্রাইভার মো. রুহুল আমিন (৩৫)-কে গ্রেফতার করেন।

পরর্বর্তীতে এবিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শক্রমে বিধি মোতাবেক প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ মাহাবুবুল আলম এবং উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: তানভিন সুলতানার মতামতের ভিত্তিতে উদ্ধারকৃত মহিলাদের গর্ভফুল সাদৃশ্য আলামতগুলো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয় এবং ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতঃ ধামরাই, ঢাকা সহ বিভিন্ন এলকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী নজরুল ইসলাম (৫৪), মোঃ মুমিনুর রহমান (৩২), দেওয়ান মোঃ অমিত (৩১) ও মোঃ খুরশিদ আলম (২৫)-দের গ্রেফতার করা হয়। ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী নজরুল ইসলাম (৫৪) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কর্মচারীদের মাধ্যমে অবৈধভাবে মহিলাদের গর্ভফুল সাদৃশ্য অংশ সংগ্রহ করে হিমায়িত করার পর ড্রাইভার মোঃ রুহুল আমিন (৩৫)-এর মাধ্যমে ঢাকার ধামরাই এলাকার মো. মুমিনুর রহমান (৩২)-এর নিকট সরবরাহ করে থাকে।

ডিবি পুলিশ আরও জানান, সরবরাহকৃত মহিলাদের গর্ভফুল সাদৃশ্য অংশ আসামী মো. মুমিনুর রহমান (৩২) ও আসামী দেওয়ান মো. অমিত (৩১) চক্রের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে কোনপ্রকার বৈধভিত্তি বা অনুমতি ব্যতীত প্রক্রিয়াজাত ও ক্রয়-বিক্রয় করে আসছেন যা আইন অনুযায়ী অপরাধ।

ধৃত আসামীর পূর্ণ নাম ও ঠিকানাঃ ১/ নজরুল ইসলাম (৫৪), পিতা- মনির উদ্দিন মুন্সি, সাং-ধলিরকান্দা, থানা-তারাকান্দা, জেলা-ময়মনসিংহ, ২/ মোঃ রুহুল আমিন (৩৫), পিতা- আব্দুল হামেদ তালুকদার, সাং- বাদুড় তলা, থানা- গৌরনদী, জেলা- বরিশাল, এ/পি বাড়ী নং-৫৪ হাজী সাহেবের বাড়ী বেড়ীবাঁধ, হাজারীবাগ, ডিএমপি, ঢাকা, ৩/ মো. মুমিনুর রহমান (৩২), পিতা-মৃত মাহবুবুর, সাং-৬২/৩/১ বাগনগর মডেল টাউন, থানা-ধামরাই, জেলা-ঢাকা, ৪/ দেওয়ান মোঃ অমিত (৩১), পিতা-দেওয়ান মোঃ আসফাক, সাং-কালিয়াগার, থানা-ধামরাই, জেলা-ঢাকা ও ৫/ মোঃ খুরশিদ আলম (২৫), পিতা-মৃত মোখলেছুর রহমান, সাং-পাহাড় পাইবজান, থানা-মুক্তাগাছা, জেলা-ময়মনসিংহ।

উদ্ধার হওয়া আলামত হলো, ১। পলিথিনে মোড়ানো ৩৫০ টি মহিলাদের গর্ভফুল সাদৃশ্য অংশ বিশেষ।, ২। ০৩ টি ক্যাটগার্ডসহ সুই, ৩। ০১ টি খোলা ইনজেকশনের এ্যাম্পল, ৪। ০১ টি ব্যবহৃত গ্লাভস, ৫। ০১ টি নীল রংয়ের পিক-আপ।

এবিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) জানান, গ্রেপ্তার হওয়া সকল আসামীকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিজ্ঞ আদালতে নিকট সোপর্দ করা হয়েছে।

নৌবাহিনীর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২৫ কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন নৌবাহিনী প্রধান

ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানে নারীর গর্ভফুল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে ধারণ করে ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান-২০২৫’ এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ উপলক্ষ্যে বুধবার (২৫-০৬-২০২৫) নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বানৌজা ঢাকায় গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ‘বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২৫’ উদ্বোধন করেন। পরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির সাফল্য কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এ সময় নৌবাহিনী সদর দপ্তরের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারগণসহ ঢাকা নৌঅঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নাবিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

‘বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২৫’ সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশের সকল নৌ ঘাঁটি, স্থাপনা এবং উপকূলীয় এলাকাসমূহে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করছে। নৌবাহিনী প্রধান সবুজ, শ্যামল ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে সকল নৌসদস্যকে বৃক্ষরোপণের আহবান জানান। এছাড়াও তিনি উপকূলীয় অঞ্চলে অধিকহারে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেন। উল্লেখ্য, নৌ ঘাঁটি, স্থাপনা ও উপকূলীয় এলাকাসমূহে ফলদ, বনজ ও ভেষজ চারা রোপণের মাধ্যমে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করলে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানে নারীর গর্ভফুল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানকে অপসারণ করা না হলে আগামী শনিবার (২৮ জুন) থেকে রাজস্ব বোর্ডের সব দপ্তর লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছে সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকা এই ঘোষণা দেন।

আবদুর রহমানকে আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী আমলা আখ্যা দিয়ে মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও সেহেলা সিদ্দিকা বলেন, দেশ ও রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে আবদুর রহমান খান। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এনবিআরের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।

তারা বলেন, ইতোমধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবির এই আন্দোলনকে বাধা দিতে গতকাল রোববার আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়। এর মধ্যে দুজন আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের, একজন এনবিআর বোর্ড অফিসের এবং বাকি দুজন ঢাকা ও কুমিল্লা কর অঞ্চলের। এ ধরনের বদলির তীব্র নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে আন্দোলনের থামাতো এই ধরনের বদলি বন্ধেরও দাবি করেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনবিআরের প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ আজ সোমবারের মধ্যে বাতিল না করা হলে আগামীকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকাস্থ কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলমবিরতি এবং ঢাকার বাইরে নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি, কলমবিরতি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে। এছাড়া প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ বাতিল না করা হলে এবং এ ধরনের নতুন কোনো বদলি আদেশ জারি করা হলে আগামী ২৫ ও ২৬ জুন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে কলমবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ জুনের মধ্যে এসব বদলি আদেশ বাতিল না হলে ২৮ জুন থেকে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়করের সব দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন চলবে বলা হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাফনের কাপড় পরে তিনঘণ্টা (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত) কলম বিরতিরসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। এসময় সংস্থাটির বিভক্ত করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ তৈরিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিত্ব রাখার জোরদাবি রাখেন। কর্মসূচিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছে, অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এনবিআর চেয়ারম্যানকে রাজস্ব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণাটি থাকবে।

গত মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচিতে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পরে কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি বজায় রাখেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফেরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি স্বাভাবিক কাজে ফিরলেও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কোনো কর্মসূচি নেওয়া হলেও তাদেরকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুন্ডু

ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানে নারীর গর্ভফুল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুণ্ডু। মাত্র ৬ বছর বয়সেই তিনি পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার (মুজিবনগর কর্মচারী) সনদ! ওই সনদে তিনি চাকরি করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার জন্মসনদ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ছিলেন ৬ বছরের শিশু। প্রকৃতপক্ষে ‘মুজিবনগর কর্মচারীর’ জাল সনদ দিয়ে এখন পর্যন্ত সাবরেজিস্ট্রার পদে চাকরি করে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তার পথ ধরেই দেশে এখন ৩৯ জন সাবরেজিস্ট্রার বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কর্মরত আছেন। এই চাকরির সুবাদে রামজীবন কুণ্ডু কয়েক কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ করেছেন বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সংসদ-সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ সেনের ভাগ্নি জামাতা বলে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ের সূত্রে এবং রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। প্রতিটি দলিল সম্পাদনের জন্য তাকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ঘুস দিতে হতো। রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে প্রতিদিন এক থেকে দুই শতাধিক দলিল রেজিস্ট্রি হয়। এতে দেখা যায় তিনি প্রতিদিন দলিল সম্পাদন বাবদ প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা ঘুস নিতেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার সহকর্মীরা জানান, তিনি রংপুর নগরীর আরএমসি মার্কেটের সামনে ৮ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার ওপরে। রাজারহাটে নিজ গ্রামে জমি কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার বেশি। ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। রংপুর ধাপ চেকপোস্ট সড়কে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। নামে-বেনামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

প্রতিদিন সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ঘুসের টাকা বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য রনি নামে একজনকে তিনি তার অফিসে নিজের চেয়ারের পাশে কম্পিউটার দিয়ে বসিয়ে রাখতেন। রনি টাকার হিসাব রাখত। সে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী নয়। বাসা পর্যন্ত ঘুসের টাকা পৌঁছে দিত রনি নিজেই। এজন্য তাকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছেন সাবরেজিস্ট্রার। আর এই সুযোগে রনি নিজেই ধাপ সাগর পাড়ায় ৫ তলা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। তার একাধিক মাইক্রোবাস রয়েছে বলেও জানা গেছে।

জন্ম সদনে রামজীবন কুণ্ডুর জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ১৯৬৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছরেরও কম। এরপরও তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে চাকরি করছেন। তার এই জাল সনদের বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। দেশে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে ২০০৯ সালে ১৯০ জনকে সাবরেজিস্ট্রার পদে আত্তীকরণ করা হয়েছিল উচ্চ আদালতের নির্দেশে। তাদের মধ্যে ১৯৬৮, ১৯৬৭, ১৯৬৬, ১৯৬৫ সালে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরাও ছিলেন। যাদের বয়স মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র ৩ থেকে ৬ বছর ছিল।

জালিয়াতির মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া নিয়ে তখন নিবন্ধন দপ্তরসহ আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। কারণ মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। ওই সরকারের কর্মচারী হতে হলে তাদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে তাদের জন্মসাল হওয়া দরকার ১৯৫২ অথবা তার পূর্বে। কিন্তু নিয়োগ পাওয়াদের সবারই জন্ম তারিখ ছিল ১৯৫৩ সালের পরে। এর মধ্যে ১৩৮ জনের বয়সই ছিল ১০ বছরের নিচে। আর ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সালে জন্ম তারিখ আছে এমন সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৫ জন। মূলত ’৬৪ সালের পর যাদের জন্ম দেখানো হয়েছিল তাদের ৩৯ জনই এখন কর্মরত রয়েছেন এবং আগামী বছর তারা অবসরে যাবেন।

জানা যায়, ২০০৯ সালে মুজিবনগর কর্মচারীর কোটায় সাবরেজিস্ট্রারের চাকরি পাওয়ার আগে রামজীবন কুণ্ডু কুড়িগ্রামের রাজারহাটে একটি প্রাইভেট কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।)