শিরোনাম:

মুক্তাগাছায় বাস চালককে পেটালেন ইউএনও, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

মুক্তাগাছায় বাস চালককে পেটালেন ইউএনও, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বাস চালককে মারধরের অভিযোগ এনে টাঙ্গাইল- ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ইসলাম পরিবহনের শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘন্টাব্যাপি শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।

এসময় তারা মুক্তাগাছা শহরের পূরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে বড়হিস্যা বাজার পর্যন্ত টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আড়াআড়িভাবে ইসলাম পরিবহন প্রাইভেট লিমিটেডের বাস রেখে অবরোধ সৃষ্টি করে। একদল শ্রমিক পূরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলামের শাস্তির দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম শহরের পূরাতন বাসস্ট্যান্ড মোড়ে এসে দেখতে পান মুক্তাগাছা থেকে ঢাকাগামী স্থানীয় ইসলাম পরিবহনের বাস নির্ধারিত স্টেশনের বাইরে শহরে মহাসড়কের পাশে দাড় করিয়ে যানজট সৃষ্টি করে। তখন তিনি সেখান থেকে দ্রুত গাড়ী সরিয়ে নিতে বলেন। এক পর্যায়ে চালকের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় ইউএনও’র সঙ্গে থাকা আনসার সদস্যরা ইসলাম পরিবহনের চালককের ওপর লাঠি চার্জ করে। এসময় মো. ভুলু মিয়া (৫০) নামের ইসলাম গাড়ীর একজন চালক আহত হন। পরে তাকে মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আহত চালক ভুলু জানান, তিনি ভাবকির মোড় থেকে বাস নিয়ে শহরের পূরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসলে সেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম তাকে গাড়ী রাস্তা থেকে সড়িয়ে নিতে বলেন। এক পর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়। তার অভিযোগ ইউএনও নিজেই তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন। এর বিচার না পেলে তিনি গাড়ির নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার করার কথাও বলেন।

এর প্রতিবাদে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ইসলাম পরিবহনের শ্রমিকরা গাড়ী নিয়ে এসে রাস্তায় এ্যালোপাথারিভাবে রেখে সড়ক অবরোধ করেন। এসময় তারা ইউএনও কর্তৃক চালককে মারধর করা হয়েছে অভিযোগ এনে ইউএনওর বিচার দাবী করেন। এ সময় দুই পাশে যানবাহন আটকা পড়ে সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। রমজানের দিনে জনসাধারণ ভোগান্তির শিকার হন।

পরে মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. কামাল হোসেন ও ময়মনসিংহ থেকে সেনা সদস্যরা এসে স্থানীয় পরিবহন সেক্টরের নেতা ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলেন। পরে বেলা ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে পূরান বাসস্ট্যান্ডের ওখানে সড়কে ইসলাম পরিবহনের গাড়ী রেখে যাত্রী উঠানামা করে আসছে। এতে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে ইসলাম পরিবহনসহ অন্যান্য গাড়ী নির্ধারিত টার্মিনালে রাখার জন্য মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সেটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যৌথবাহিনীর অভিযানও চলে। তারপরও ইসলামপরিবহনের বাস সেখানে রেখে যাত্রী উঠানামা করছিল। সকালে ইউএনও মহোদয়ের নজরে আসলে তিনি তাদেরকে গাড়ী সরিয়ে নিতে বলেন। এসব নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে লাটিচার্জ করে তাদেরকে সরিয়ে দেয়া হয়। এরপর শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।

পরে সমাধানের আশ্বাসে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। অবরোধ তুলে নেওয়ায় সড়কের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।’ এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম বলেন, মুক্তাগাছা শহরে যানজটের কারণে জনভোগান্তি হয়। সেজন্য ইসলাম পরিবহনকে নির্দিষ্ট টার্মিনালে রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তারা যত্রযত্র গাড়ী রেখে যানজটের সৃষ্টি করে। সব পরিবহনকে স্ট্যান্ডে নেওয়ার জন্য একাধিক অভিযানও পরিচালনা করা হয়। কিন্তু ইসলাম পরিবহন নির্দেশ মেনে টার্নিমালে না যাওয়ার জন্য টালবাহানা করতে থাকে।

সকালে সড়কে পরিবহন রেখে যানজট সৃষ্টি করলে সেখান থেকে গাড়ী সরিয়ে নিতে বলা হয়। পরে তারা ইসলাম পরিবহনকে নির্ধারিত টার্মিনালে যাতে না নিতে হয় সেই সুযোগ খোঁজতে চালককে মারধর করার মিথ্যা অপপ্রচার দিয়ে সড়ক অবরোধের নাটক সাজায়। তিনি বলেন, ইসলাম পরিবহনকে নির্দিষ্ট টার্মিনালে যেতেই হবে। চালককে মারধরের ঘটনা মিথ্যা, বানোয়াট।

এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করলে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

মুক্তাগাছায় বাস চালককে পেটালেন ইউএনও, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানকে অপসারণ করা না হলে আগামী শনিবার (২৮ জুন) থেকে রাজস্ব বোর্ডের সব দপ্তর লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছে সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকা এই ঘোষণা দেন।

আবদুর রহমানকে আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী আমলা আখ্যা দিয়ে মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও সেহেলা সিদ্দিকা বলেন, দেশ ও রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে আবদুর রহমান খান। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এনবিআরের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।

তারা বলেন, ইতোমধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবির এই আন্দোলনকে বাধা দিতে গতকাল রোববার আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়। এর মধ্যে দুজন আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের, একজন এনবিআর বোর্ড অফিসের এবং বাকি দুজন ঢাকা ও কুমিল্লা কর অঞ্চলের। এ ধরনের বদলির তীব্র নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে আন্দোলনের থামাতো এই ধরনের বদলি বন্ধেরও দাবি করেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনবিআরের প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ আজ সোমবারের মধ্যে বাতিল না করা হলে আগামীকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকাস্থ কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলমবিরতি এবং ঢাকার বাইরে নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি, কলমবিরতি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে। এছাড়া প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ বাতিল না করা হলে এবং এ ধরনের নতুন কোনো বদলি আদেশ জারি করা হলে আগামী ২৫ ও ২৬ জুন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে কলমবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ জুনের মধ্যে এসব বদলি আদেশ বাতিল না হলে ২৮ জুন থেকে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়করের সব দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন চলবে বলা হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাফনের কাপড় পরে তিনঘণ্টা (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত) কলম বিরতিরসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। এসময় সংস্থাটির বিভক্ত করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ তৈরিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিত্ব রাখার জোরদাবি রাখেন। কর্মসূচিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছে, অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এনবিআর চেয়ারম্যানকে রাজস্ব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণাটি থাকবে।

গত মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচিতে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পরে কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি বজায় রাখেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফেরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি স্বাভাবিক কাজে ফিরলেও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কোনো কর্মসূচি নেওয়া হলেও তাদেরকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুন্ডু

মুক্তাগাছায় বাস চালককে পেটালেন ইউএনও, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুণ্ডু। মাত্র ৬ বছর বয়সেই তিনি পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার (মুজিবনগর কর্মচারী) সনদ! ওই সনদে তিনি চাকরি করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার জন্মসনদ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ছিলেন ৬ বছরের শিশু। প্রকৃতপক্ষে ‘মুজিবনগর কর্মচারীর’ জাল সনদ দিয়ে এখন পর্যন্ত সাবরেজিস্ট্রার পদে চাকরি করে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তার পথ ধরেই দেশে এখন ৩৯ জন সাবরেজিস্ট্রার বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কর্মরত আছেন। এই চাকরির সুবাদে রামজীবন কুণ্ডু কয়েক কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ করেছেন বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সংসদ-সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ সেনের ভাগ্নি জামাতা বলে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ের সূত্রে এবং রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। প্রতিটি দলিল সম্পাদনের জন্য তাকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ঘুস দিতে হতো। রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে প্রতিদিন এক থেকে দুই শতাধিক দলিল রেজিস্ট্রি হয়। এতে দেখা যায় তিনি প্রতিদিন দলিল সম্পাদন বাবদ প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা ঘুস নিতেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার সহকর্মীরা জানান, তিনি রংপুর নগরীর আরএমসি মার্কেটের সামনে ৮ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার ওপরে। রাজারহাটে নিজ গ্রামে জমি কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার বেশি। ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। রংপুর ধাপ চেকপোস্ট সড়কে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। নামে-বেনামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

প্রতিদিন সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ঘুসের টাকা বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য রনি নামে একজনকে তিনি তার অফিসে নিজের চেয়ারের পাশে কম্পিউটার দিয়ে বসিয়ে রাখতেন। রনি টাকার হিসাব রাখত। সে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী নয়। বাসা পর্যন্ত ঘুসের টাকা পৌঁছে দিত রনি নিজেই। এজন্য তাকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছেন সাবরেজিস্ট্রার। আর এই সুযোগে রনি নিজেই ধাপ সাগর পাড়ায় ৫ তলা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। তার একাধিক মাইক্রোবাস রয়েছে বলেও জানা গেছে।

জন্ম সদনে রামজীবন কুণ্ডুর জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ১৯৬৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছরেরও কম। এরপরও তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে চাকরি করছেন। তার এই জাল সনদের বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। দেশে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে ২০০৯ সালে ১৯০ জনকে সাবরেজিস্ট্রার পদে আত্তীকরণ করা হয়েছিল উচ্চ আদালতের নির্দেশে। তাদের মধ্যে ১৯৬৮, ১৯৬৭, ১৯৬৬, ১৯৬৫ সালে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরাও ছিলেন। যাদের বয়স মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র ৩ থেকে ৬ বছর ছিল।

জালিয়াতির মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া নিয়ে তখন নিবন্ধন দপ্তরসহ আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। কারণ মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। ওই সরকারের কর্মচারী হতে হলে তাদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে তাদের জন্মসাল হওয়া দরকার ১৯৫২ অথবা তার পূর্বে। কিন্তু নিয়োগ পাওয়াদের সবারই জন্ম তারিখ ছিল ১৯৫৩ সালের পরে। এর মধ্যে ১৩৮ জনের বয়সই ছিল ১০ বছরের নিচে। আর ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সালে জন্ম তারিখ আছে এমন সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৫ জন। মূলত ’৬৪ সালের পর যাদের জন্ম দেখানো হয়েছিল তাদের ৩৯ জনই এখন কর্মরত রয়েছেন এবং আগামী বছর তারা অবসরে যাবেন।

জানা যায়, ২০০৯ সালে মুজিবনগর কর্মচারীর কোটায় সাবরেজিস্ট্রারের চাকরি পাওয়ার আগে রামজীবন কুণ্ডু কুড়িগ্রামের রাজারহাটে একটি প্রাইভেট কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।)

হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্টে ভুল তথ্যের অভিযোগ, দুদকের সতর্ক বার্তা

মুক্তাগাছায় বাস চালককে পেটালেন ইউএনও, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে ভুল ও যাচাইবিহীন তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের দাবি, ওই পোস্টে দুদকের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় দুদক।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি পোস্ট কমিশনের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন।

এ বিষয়ে সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে একটি প্রতারক চক্র দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের কথা বলে প্রতারণা করে আসছে। যার সাথে দুদকের কর্মকর্তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। দুদক ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং প্রতারক চক্রের অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এতে বলা হয়, ইতোপূর্বে দুদক প্রতারণা রোধে সবাইকে সতর্ক করে আসছে, যা বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরূপ প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুদককে দোষারোপ করে যার ফলে দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তির শেষ অংশ দুদক জানায়, প্রতারণামূলক ফোন কল, বার্তা বা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে কারও কাছ থেকে টাকা চাওয়া হলে কিংবা কোনো প্রতারণা বা অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেলে দুদকের টোল ফ্রি হটলাইন-১০৬ নম্বরে জানানোর অথবা নিকটস্থ দুদক কার্যালয় বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।