শিরোনাম:

এক কেজি ওজনের ‘লাউ বেগুন’ চাষে সফল নওগাঁর রফিকুল-বৃষ্টি দম্পতি

এক কেজি ওজনের ‘লাউ বেগুন’ চাষে সফল নওগাঁর রফিকুল-বৃষ্টি দম্পতি

এক কেজি ওজনের ‘লাউ বেগুন’ চাষে সফল নওগাঁর রফিকুল-বৃষ্টি দম্পতি। ছবি: বাসস

বরেন্দ্র জেলার সদর উপজেলার হাঁপানিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ও বৃষ্টি দম্পতি নতুন জাতের ‘লাউ বেগুন’ চাষ করে জেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। দূর থেকে দেখলে মনে হবে লাউ। কিন্তু কাছে গেলে ভুল ভাঙবে। মাঝারি আকারের লাউয়ের মতো সবজিটি অতি পরিচিত বেগুন। জাতের নাম বারি-১২।

নওগাঁ কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, জেলায় প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে বারি-১২ জাতের ‘লাউ বেগুন’। এই বেগুনের এক একটির ওজন এক থেকে দেড় কেজি। প্রতিটি গাছে অন্তত ৭ থেকে ৮ কেজি বেগুন ধরেছে। অন্য জাতের বেগুনের চেয়ে এ বেগুনের ফলন ও গুনগত মান ভালো হওয়ায় বাজারে দামও বেশি। এ বেগুনের রোগ-বালাই কম। সেচও দিতে হয় কম। এর ভর্তা যেমন সুস্বাদু, তেমনি ভাজিসহ ও অন্যান্য তরকারিতে স্বাদও অতুলনীয়। ডিসেম্বর মাসের শুরুতে এর চারা লাগানো হয় এবং ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকে এর ফলন পাওয়া যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাসসকে বলেন, ‘এই বেগুনে রয়েছে হরেক রকমের পুষ্টিগুন। ভিটামিন ও আয়রন। এটি শক্তিশালী একটি এন্টিঅক্সিডেন্টও বটে। প্রচুর পরিমান আয়রন থাকায় এটি রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। ভিটামিন ‘এ’ থাকায় চোখের পুষ্টি জোগায় এবং চোখের যাবতীয় রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। এই বেগুনে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। যা দাঁত ও হাড়ের জন্য উপকারী। নতুন এ জাতের বেগুন প্রচলিত অন্যান্য বেগুনের চেয়ে ওজন বেশি হয়। তাই একে কেউ ‘কেজি বেগুন’ আবার কেউবা ‘লাউ বেগুন’ বলে থাকে। এই বেগুন উচ্চ ফলনশীল অর্থকরী ফসল এবং ব্যাক্টেরিয়াজনিত ঢলে পড়া রোগ সহনশীল।’

নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁপানিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের পুত্র রকিফুল ইসলাম (৩৫)। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর আর পড়ালেখা করতে পারেন নি। অল্প বয়সেই পারিবারিক প্রয়োজনে সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হন। এরপর আস্তে আস্তে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ শুরু করলেও সফল হতে পারেন নি। উপায় না দেখে তিনি ও তার স্ত্রী বৃষ্টি বানু বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ‘মৌসুমী’র সদস্য হোন। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)- এর সহায়তায় ২০২৪ সালে মৌসুমী থেকে ‘বারি-১২’ জাতের বেগুন চাষের প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে মৌসুমী থেকে তাদের ৬০০টি বেগুনের চারা দেয়া হয়। রফিকুল-বৃষ্টি দম্পতি তাদের নিজস্ব ১৫ শতক জমিতে এই ৬০০ টি লাউ বেগুনের চারা রোপন করেন। এখন সেসব গাছে প্রচুর বেগুন ধরেছে।

রকিফুল ইসলাম বাসসকে বলেন, গত সপ্তাহে নওগাঁ হাটে দেড় মন বেগুন নিয়ে গিয়েছিলাম। হাটে নিয়ে যাওয়ার পর সবাই জানতে চাইছে, ‘এটি লাউ না বেগুন?’ অন্য বেগুন যেখানে ৫০০ টাকা মন আর সেখানে আমি ১৬০০ টাকা মন দরে বিক্রি করেছি। নিমিষেই শেষ। অন্য বেগুন থেকে এই বেগুনের লাভ ৪ গুন। তিনি জানান, প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে এই বেগুন দেখতে লোকজন আসছে।

রফিকুলের স্ত্রী বৃষ্টি বানু (২২) বাসসকে বলেন, ‘মৌসুমি অফিস থেকে ১৫ শতক জমির জন্য নতুন জাতের লাউ বেগুনের ৬০০টি চারা দিয়েছিল। সেই চারা গাছ বড় হয়ে এখন বেগুন দিচ্ছে। প্রতিটি বেগুনের ওজন এক থেকে দেড় কেজি। বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছি। এ জন্য মৌসুমিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’

সরেজমিনে রফিকুলের বেগুন ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আশেপাশের গ্রাম থেকে বেগুন ক্ষেত দেখতে লোকজন ভিড় করছেন। বেগুন ক্ষেত দেখতে আসা রুহুল আমিন ও কেরামতউল্লাহ বলেন, এতো বড় বেগুন কোনোদিন দেখিনি। বিশ্বাস করা কঠিন যে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের একটি বেগুন হয়। আমরাও আগামী বছর এই বেগুনের চাষ করবো।

মৌসুমির কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান আরিফ বলেন, পিকেএসএফ এর আর্থিক সহায়তায় মৌসুমি থেকে রফিকুল দম্পতিকে এসব লাউ বেগুনের চারা দেয়া হয়েছে। তারা সফল হয়েছে। তাদের উৎপাদন ও বেশ ভালো হয়েছে। যা জেলায় বেশ সাড়া ফেলেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নতুন জাতের এই বেগুন প্রতি বিঘায় ৫ থেকে ৭ টন হয়। বীজ প্রাপ্তি সহজীকরণ ও উৎপাদন কলাকৌশল, এ জাতের বেগুনের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ বিষয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে পারলে এ জাতের বেগুন দ্রুত মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক বিস্তার লাভ করবে। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হবেন।

সামাজিক ব্যবসা মাধ্যমে ‘একটি সুন্দর ও উন্নত বিশ্ব’ গড়ে তোলা সম্ভব: প্রধান উপদেষ্টা

এক কেজি ওজনের ‘লাউ বেগুন’ চাষে সফল নওগাঁর রফিকুল-বৃষ্টি দম্পতি

শুক্রবার সাভারে দু’দিনের ‘সোশ্যাল বিজনেস ডে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সিএ ফেসবুক

সামাজিক ব্যবসার (সোশ্যাল বিজনেস) রূপান্তর সক্ষম শক্তি এবং এর মাধ্যমে ইতিবাচক টেকসই পরিবর্তন আনার শক্তিশালী উপায়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সামাজিক ব্যবসা শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং পুরো বিশ্বকে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এবং নতুন সভ্যতাও তৈরি করতে পারে। এই ব্যবসার মাধ্যমে ‘একটি সুন্দর ও উন্নত বিশ্ব’ গড়ে তোলা সম্ভব, যা বর্তমানের হতাশা থেকে মুক্তি এনে তাৎপর্যপূর্ণ রূপান্তর ঘটাতে পারবে।

শুক্রবার সাভারের জিরাবো সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে দু’দিনের ‘সোশ্যাল বিজনেস ডে’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ১৫তম সামাজিক ব্যবসা দিবসের উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা মূল বক্তা হিসেবে যোগ দেন।

ইউনূস সেন্টার ও গ্রামীণ গ্রুপ যৌথভাবে ১৫তম সামাজিক ব্যবসা দিবসের আয়োজন করেছে।

‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে সর্বোত্তম পথ হলো সামাজিক ব্যবসা’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের সামাজিক ব্যবসা দিবস উদ্‌যাপন করা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর শক্তিশালী ও আবেগঘন মূল বক্তব্যে সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, বিশ্ব একটি ভুল পথে চলছে এবং কেবল নিঃস্বার্থ, ভালো কাজের জন্য স্বপ্নবান হওয়া এবং সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, পৃথিবীতে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার একমাত্র সঠিক পথ হল সামাজিক ব্যবসা। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।

তিনি তরুণদেরকে বৈশ্বিক পরিবর্তন আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, উদ্যোক্তা হিসেবে ছোট থেকে শুরু করতে হবে, বড় স্বপ্ন দেখতে হবে এবং একসঙ্গে কাজ করে এমন একটি বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে, যার বৈশিষ্ট্য হবে তিনটি শূন্য-‘শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য গড় কার্বন নিঃসরণ।’

চাকরি প্রার্থী নয়, উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করার মত শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রথম দিন থেকেই যেন জানেন—তারা চাকরির জন্য এখানে আসেনি। কিন্তু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্রদের স্বপ্ন দেখতে দেওয়া হয় না। আমি বলি—শিক্ষা ব্যবস্থার প্রথম দায়িত্বই হলো—স্বপ্ন দেখার সুযোগ দেওয়া।’

ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগে স্বপ্ন দেখতে হবে। তারপর কীভাবে সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া যায়, সেই পথ খুঁজে বের করো। একে অপরকে চ্যালেঞ্জ দাও। এই ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা গড়তে সোশ্যাল বিজনেস শিক্ষার গুরুত্ব আমাদের কাছে এত বড় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, তরুণদের বলবো, ‘যদি তুমি একজন চাকরি প্রার্থী হও, তবে সেটি আমাদের জন্য লজ্জার। কারণ আমরা তোমাকে নিজেকে আবিষ্কার করার মত সাহায্য করতে পারিনি।’ যদি তুমি নিজেকে আবিষ্কার করো—তাহলে কখনোই চাকরি প্রার্থী থাকবে না। তুমি একজন উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে।

ভারত-পাকিস্তান, ইরান-ইসরায়েল-ফিলিস্তিন এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই বছরের প্রেক্ষাপট অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে খারাপ। আগের সোশ্যাল বিজনেস ডে‑গুলোতে আমরা অনুভব করতাম যে, পৃথিবী একটা আশাব্যঞ্জক দিকে এগোচ্ছে। আমরা ভেবেছিলাম—বিশ্বে যুদ্ধের অধ্যায় শেষ হচ্ছে। আমরা আশা করেছিলাম—মানবজাতি এখন শান্তিতে বাস করবে। কিন্তু হঠাৎ করেই এই বছর নানা ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে শুরু করল। দরিদ্র মানুষ এই যুদ্ধে পিষ্ট হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সামাজিক ব্যবসার বার্তা কী-এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সামাজিক ব্যবসার একটি বার্তা হলো পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার বার্তা—এবং এর জন্য প্রয়োজন প্রতিটি জাতির অংশগ্রহণ, প্রতিটি জাতির উচিত সেইসব সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসা যেগুলো তারা এত বছর ধরে তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, ‘এবং এই বার্তাটি খুবই সহজ, যা আমরা বারবার পুনরাবৃত্তি করে আসছি। বার্তাটি হলো—আমরা ভুল পথে চলছি। যদি আমরা এই পথেই এগিয়ে যেতে থাকি, তাহলে আমাদের সবার জন্যই এক বিশাল বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। আমরা তার থেকে রক্ষা পাবো না।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্য একটি পথ অনুসরণ করার খুবই সহজ উপায় রয়েছে এবং এর জন্য সবকিছু রাতারাতি ধ্বংস করার প্রয়োজন নেই। ‘আপনি কেবল ধীরে ধীরে ভিন্ন এক পথে হাঁটতে শুরু করুন। ব্যাস, এটাই। এটা খুবই বাস্তবসম্মত এবং সহজে বাস্তবায়নযোগ্য।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বারবার বিশ্বকে যা বোঝাতে চেয়েছি তা হলো—পুরো পৃথিবী গড়ে উঠেছে মানুষের স্বার্থপরতার একমাত্রিক ভিত্তির উপর এবং মানুষকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে স্বার্থপর সত্তা হিসেবে। আমরা এর বিরোধিতা করছি। আমরা বলছি, হ্যাঁ, আমাদের ভেতরে স্বার্থপরতা আছে, তবে এটাও ভুলে যাবেন না যে আমাদের ভেতর নিঃস্বার্থ মানসিকতাও আছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সামাজিক ব্যবসা দিবস এক ধরনের পারিবারিক মিলনমেলা, যেখানে সবাই একত্রিত হন পরিবারের সদস্যদের মতো।

তিনি বলেন, ‘আপনাদের সবার অনেক গল্প আছে বলার মতো। আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি বক্তৃতা দেওয়ার জন্য নয়, বরং নিজেদের অনুপ্রাণিত করার জন্য। আমরা সবসময় আমাদের সামাজিক ব্যবসা দিবসকে একটি উপলক্ষ হিসেবে দেখি—যেখানে আমরা নিজেদের শক্তি পুনরায় আহরণ করি।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বের হতাশাজনক পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশ অসাধারণ কিছু করেছে। তরুণরা আশ্চর্যজনক সব কাজ করেছে। তারা রাস্তায় নেমে এসেছে এবং বলেছে—এবার যথেষ্ট হয়েছে।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তরুণরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছে এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যেই দেশকে ‘চরম অন্ধকার থেকে আলোর পথে’ নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, তারা শুধু বাংলাদেশের জন্যই এটা করেনি; এটি ছিল পুরো বিশ্বের জন্য।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পুরো পৃথিবীর জন্য—এবং তরুণরা বিশ্বজুড়েই একই কাজ করতে পারে। যথেষ্ট হয়েছে। সরে দাঁড়ান। আপনারা আমাদের জন্য যথেষ্ট সমস্যা তৈরি করেছেন। এখন পৃথিবীকে নিজের মতো করে বিকশিত হতে দিন। আমরা আমাদের জন্য একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তুলব—এটাই আমাদের অঙ্গীকার। আমরা একটি নতুন সভ্যতা গড়ে তুলতে চাই এবং আমরা তা পারি।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ শুধু নিজের ইতিহাস নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্য একটি ইতিহাস হয়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সম্মানিত সভাপতি থমাস বাখের একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয় যেখানে অধ্যাপক ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা আন্দোলনের গভীর প্রভাবের প্রশংসা করেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গ্যুইন লুইস, জাপানের ইউগ্লিনা জিজি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মিৎসুরু ইজুমো, বিশ্বব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এনজিআইসির সহ-সভাপতি ইসমাইল সেরাগেলদিন, গ্রামীণ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল হাসান, ইউনূস সেন্টারের জনসংযোগ অফিসার জিনাত ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ময়মনসিংহে পিএমকে’র উদ্যোগে ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ওষুধ বিতরণ

এক কেজি ওজনের ‘লাউ বেগুন’ চাষে সফল নওগাঁর রফিকুল-বৃষ্টি দম্পতি

ময়মনসিংহের পল্লীমঙ্গল কর্মসূচি (পিএমকে) উদ্যোগে প্রায় চার শতাধিক অসহায় দরিদ্র মানুষকে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে মেডিসিন, গাইনি, চক্ষু ও টেলিমেডিসিন চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল থেকে খাগডহড় ব্রাঞ্চে সারাদিন ব্যাপী এ চিকিৎসা সেবা প্রদান ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়।

সেবা গ্রহীতারা জানান, পল্লীমঙ্গল কর্মসূচির এই মহতি উদ্যোগে আমরা বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবায় উপকৃত হচ্ছি, কারণ এখানে চিকিৎসা নিতে কোন টাকার প্রয়োজন হয়না। আমরা গরীব অসহায় যারা আছি তারা টাকার অভাবে অনেকে যথা সময়ে চিকিৎসা নিতে পারিনা, পল্লী মঙ্গল কর্মসূচি’র উদ্যোগে আমরা যথা সময়ে চিকিৎসা সেবা পেয়েছি।

পল্লী মঙ্গল কর্মসূচী’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আমাদের পল্লী মঙ্গল কর্মসূচী (পিএমকে) এর প্রধান নির্বাহী কামরুন্নাহার একজন মানবিক মানুষ, তাই অসহায় গরীবদের পাশে থাকার জন্যই এই চিকিৎসা সেবার মহতি উদ্যোগ নিয়ে প্রতিটি ব্রাঞ্চে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে সারা দেশে বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ প্রদান করা হয়। আমরা যারা পল্লী মঙ্গল কর্মসূচিতে কাজ করছি এই মহতি উদ্যোগে নিজেদেরকে নিয়োজিত করে সেবা প্রদানে দায়িত্ব পালন করে নিজেদের ধন্য মনে করছি সেই সাথে সকলের দোয়া কামনা করছি, আমরা যেন মানুষকে সবসময় এ চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যেতে পারি।

৯৯ কেজি গাঁজাসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি

এক কেজি ওজনের ‘লাউ বেগুন’ চাষে সফল নওগাঁর রফিকুল-বৃষ্টি দম্পতি

রাজধানীর বনানী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯৯ কেজি গাঁজাসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-গুলশান বিভাগ। গ্রেফতারকৃতের নাম মোঃ একুব আলী শেখ (৫১)।

মঙ্গলবার (২৪ জুন ২০২৫ খ্রি.) রাত আনুমানিক ১১:৪৫ ঘটিকায় বনানী থানাধীন ১১ নং রোডের পশ্চিম মাথা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি-গুলশান বিভাগের একটি চৌকস টিম।

ডিবি-গুলশান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে মাদক উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে ডিবি গুলশান বিভাগের একটি টিম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে কতিপয় মাদক কারবারি ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজা বিক্রির উদ্দেশে বনানী থানার রোড নং-১১ এর পশ্চিম প্রান্তে সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজের নিচে ফুটপাতে অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে উক্তস্থানে অভিযান পরিচালনা করে ৯৯ কেজি গাঁজাসহ একুব আলীকে গ্রেফতার করা হয়।

ডিবি-গুলশান বিভাগ সূত্রে আরও জানা যায়,গ্রেফতারকৃত একুব আলী একজন পেশাদার মাদক কারবারি। সে দীর্ঘদিন যাবৎ কুড়িগ্রাম জেলাসহ বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধ মাদকদ্রব্য গাঁজা সংগ্রহ করে বনানীসহ ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় করতো। উদ্ধারকৃত গাঁজা বিক্রয়ের উদ্দেশে সে ঘটনাস্থলে অবস্থান করছিলো মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারকৃতকে বনানী থানার মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।