শিরোনাম:

ডাকসু নির্বাচন জুলাইয়ের পরে করার সুপারিশ প্রভোস্টদের

ডাকসু নির্বাচন জুলাইয়ের পরে করার সুপারিশ প্রভোস্টদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন জুলাইয়ের পরে করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন হলের প্রভোস্টরা। একই সঙ্গে নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংজ্ঞা দ্রুততম সময়ে নির্ধারণের পক্ষে মত দিয়েছেন তারা।

ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে পরামর্শদান, নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়ন/সংশোধন এবং ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সংশোধন/পরিমার্জন করার বিষয়ে গঠিত পৃথক ৩টি কমিটির সঙ্গে আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ সুপারিশ ও মতামত প্রকাশ করেন হল প্রভোস্টরা। নতুন ছাত্রসংগঠনের আত্মপ্রকাশ এবং বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এমন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

ডাকসু নির্বাচনে অনার্স, মাস্টার্স ও এমফিলের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা প্রার্থী হতে ও ভোট দিতে পারবেন। পিএইচডি ও প্রফেশনাল কোর্সের শিক্ষার্থীরা প্রার্থী ও ভোট দিতে পারবেন না—এমন শর্ত নির্ধারণেও পরামর্শ আসে প্রভোস্টদের পক্ষ থেকে।

ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোও ডাকসু সংস্কার ও নির্বাচন ইস্যুতে একমত। সংস্কারের পর নির্বাচনের দাবি তোলা ছাত্রসংগঠনগুলো বলছে, সব ছাত্রসংগঠনই চায় ডাকসু নির্বাচন হোক। তবে নির্বাচনের আগে গঠনতন্ত্র সংশোধনসহ ক্যাম্পাসে রাজনীতির সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।

সভায় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে কারা ভোট দিতে পারবে, সে জন্য একটা মানসম্মত ব্যাখ্যা দরকার। প্রভোস্টদের পক্ষ থেকে এ নিয়ে বিভিন্নজন বিভিন্ন প্রস্তাব রাখেন।

তিনি বলেন, এ‘কজন শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষা দেওয়ার পর ছাত্র হিসেবে পরিগণিত হবে, নাকি ফলাফল প্রকাশ হওয়ার আগপর্যন্ত সে আমাদের ছাত্র হিসেবে ভোটাধিকার পাবে। একই সঙ্গে থিসিস জমা দেওয়ার পরপরই ছাত্র হিসেবে পরিগণিত হবে কি না, এ বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে। আমরা মূলত ছাত্রত্বের একটা স্ট্যান্ডার্ড সংজ্ঞার প্রস্তাব রাখি। একই সঙ্গে হলে কারা ভোট দিতে পারবে এবং কারা পারবে না, এ বিষয়গুলো। হলে থাকা ছাত্রদের হল কার্ড থাকতে হবে কি না, এগুলোই আজকের আলোচনায় স্থান পায়৷’

অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। আরও বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলবে। এরপরই তারা একটা সিদ্ধান্তে আসবে। ডাকসু নির্বাচন একটা প্রক্রিয়া। কর্তৃপক্ষ যেহেতু এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছে, সেহেতু অবশ্যই তাদের এ বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে যেন খুব দ্রুতই ডাকসু দেওয়া যায়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সফলভাবে আয়োজনের বিষয়ে পরামর্শদান, নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়ন/সংশোধন এবং ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সংশোধন/পরিমার্জন করার বিষয়ে গঠিত পৃথক তিনটি কমিটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব কমিটি প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন, সাধারণ ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিকসহ সব অংশীজনের মতামত গ্রহণ করছে। কমিটিগুলো ইতোমধ্যেই কয়েক দফা বৈঠক করে অংশীজনদের লিখিত মতামত গ্রহণ করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সফলভাবে আয়োজনের বিষয়ে পরামর্শদানের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সব ছাত্রসংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আলোচনা সম্পন্ন করেছে। কমিটি শিগগিরই গুগল ফরমের মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করবে। চলতি সপ্তাহেই হল প্রাধ্যক্ষদেরর সঙ্গে এ বিষয়ে মতবিনিময় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময়ের বিষয়টিও শিগগিরই সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়ন/সংশোধনের জন্য প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সব ছাত্রসংগঠন, ডাকসুর সাবেক নেতৃবৃন্দ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা, সাধারণ শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির ২০১৯ ও ২০২৫ সালের সদস্যবৃন্দ, হল প্রভোস্ট, হাউজ টিউটরবৃন্দ এবং আগের ডাকসু নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদেরর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় সভা করে। সভায় অংশগ্রহণকারী অংশীজনদের সুচিন্তিত মতামত পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন তৈরির কাজ বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

এ ছাড়া ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সংশোধন/পরিমার্জন করার বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হককে আহ্বায়ক করে পৃথক একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে গঠনতন্ত্র সংশোধনের প্রস্তাব আহ্বান করা হয়। এপ্রেক্ষিতে অনেক সুচিন্তিত প্রস্তাব পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করে গঠনতন্ত্র সংশোধনের প্রাথমিক খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুতকৃত খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত গ্রহণ করা হবে। প্রস্তাবনাসমূহ চূড়ান্ত হওয়ার পর গঠনতন্ত্র সংশোধনের বিষয়ে সুপারিশ পেশ করা হবে।

ডাকসু নির্বাচন বিষয়ে গঠিত বিভিন্ন কমিটির চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার পর নির্বাচনের বিস্তারিত সময়সূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচন করতে চাই, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ এটা জুলাই স্পিরিটের প্রতি আমাদের কমিটমেন্ট। আমরা করতে চাই এ জন্য না যে কোনো রাজনৈতিক দল এসে আমাদের কী বলবে। নির্বাচন দেওয়ার কারণ, এটা আমাদের গণঅভ্যুত্থানের মূল স্পিরিটকে সম্মান জানানোর পথ।’

নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে ঢাবি উপাচার্য আরও বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তিনটা কমিটি স্বাধীনভাবে কাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশানসন এই কমিটিতে কোনোভাবে নাক গলাচ্ছে না। এই কমিটির পরামর্শক্রমেই নির্বাচন ঘোষণা করা হবে। কারও চাপে পড়ে আমরা এটা করব না। আমি ভয় পাই। তবে আমাকে ভয় দেখিয়ে কাজ করানো যাবে না।’

প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সবশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই নির্বাচনে তখনকার ছাত্রলীগ সভাপতিকে হারিয়ে ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন গণ অধিকার পরিষদের বর্তমান নেতা নুরুল হক নুর।

এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করলে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

ডাকসু নির্বাচন জুলাইয়ের পরে করার সুপারিশ প্রভোস্টদের

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানকে অপসারণ করা না হলে আগামী শনিবার (২৮ জুন) থেকে রাজস্ব বোর্ডের সব দপ্তর লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছে সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকা এই ঘোষণা দেন।

আবদুর রহমানকে আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী আমলা আখ্যা দিয়ে মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও সেহেলা সিদ্দিকা বলেন, দেশ ও রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে আবদুর রহমান খান। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এনবিআরের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।

তারা বলেন, ইতোমধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবির এই আন্দোলনকে বাধা দিতে গতকাল রোববার আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়। এর মধ্যে দুজন আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের, একজন এনবিআর বোর্ড অফিসের এবং বাকি দুজন ঢাকা ও কুমিল্লা কর অঞ্চলের। এ ধরনের বদলির তীব্র নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে আন্দোলনের থামাতো এই ধরনের বদলি বন্ধেরও দাবি করেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনবিআরের প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ আজ সোমবারের মধ্যে বাতিল না করা হলে আগামীকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকাস্থ কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলমবিরতি এবং ঢাকার বাইরে নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি, কলমবিরতি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে। এছাড়া প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ বাতিল না করা হলে এবং এ ধরনের নতুন কোনো বদলি আদেশ জারি করা হলে আগামী ২৫ ও ২৬ জুন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে কলমবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ জুনের মধ্যে এসব বদলি আদেশ বাতিল না হলে ২৮ জুন থেকে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়করের সব দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন চলবে বলা হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাফনের কাপড় পরে তিনঘণ্টা (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত) কলম বিরতিরসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। এসময় সংস্থাটির বিভক্ত করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ তৈরিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিত্ব রাখার জোরদাবি রাখেন। কর্মসূচিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছে, অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এনবিআর চেয়ারম্যানকে রাজস্ব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণাটি থাকবে।

গত মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচিতে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পরে কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি বজায় রাখেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফেরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি স্বাভাবিক কাজে ফিরলেও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কোনো কর্মসূচি নেওয়া হলেও তাদেরকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুন্ডু

ডাকসু নির্বাচন জুলাইয়ের পরে করার সুপারিশ প্রভোস্টদের

রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুণ্ডু। মাত্র ৬ বছর বয়সেই তিনি পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার (মুজিবনগর কর্মচারী) সনদ! ওই সনদে তিনি চাকরি করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার জন্মসনদ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ছিলেন ৬ বছরের শিশু। প্রকৃতপক্ষে ‘মুজিবনগর কর্মচারীর’ জাল সনদ দিয়ে এখন পর্যন্ত সাবরেজিস্ট্রার পদে চাকরি করে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তার পথ ধরেই দেশে এখন ৩৯ জন সাবরেজিস্ট্রার বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কর্মরত আছেন। এই চাকরির সুবাদে রামজীবন কুণ্ডু কয়েক কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ করেছেন বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সংসদ-সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ সেনের ভাগ্নি জামাতা বলে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ের সূত্রে এবং রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। প্রতিটি দলিল সম্পাদনের জন্য তাকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ঘুস দিতে হতো। রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে প্রতিদিন এক থেকে দুই শতাধিক দলিল রেজিস্ট্রি হয়। এতে দেখা যায় তিনি প্রতিদিন দলিল সম্পাদন বাবদ প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা ঘুস নিতেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার সহকর্মীরা জানান, তিনি রংপুর নগরীর আরএমসি মার্কেটের সামনে ৮ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার ওপরে। রাজারহাটে নিজ গ্রামে জমি কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার বেশি। ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। রংপুর ধাপ চেকপোস্ট সড়কে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। নামে-বেনামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

প্রতিদিন সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ঘুসের টাকা বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য রনি নামে একজনকে তিনি তার অফিসে নিজের চেয়ারের পাশে কম্পিউটার দিয়ে বসিয়ে রাখতেন। রনি টাকার হিসাব রাখত। সে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী নয়। বাসা পর্যন্ত ঘুসের টাকা পৌঁছে দিত রনি নিজেই। এজন্য তাকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছেন সাবরেজিস্ট্রার। আর এই সুযোগে রনি নিজেই ধাপ সাগর পাড়ায় ৫ তলা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। তার একাধিক মাইক্রোবাস রয়েছে বলেও জানা গেছে।

জন্ম সদনে রামজীবন কুণ্ডুর জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ১৯৬৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছরেরও কম। এরপরও তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে চাকরি করছেন। তার এই জাল সনদের বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। দেশে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে ২০০৯ সালে ১৯০ জনকে সাবরেজিস্ট্রার পদে আত্তীকরণ করা হয়েছিল উচ্চ আদালতের নির্দেশে। তাদের মধ্যে ১৯৬৮, ১৯৬৭, ১৯৬৬, ১৯৬৫ সালে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরাও ছিলেন। যাদের বয়স মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র ৩ থেকে ৬ বছর ছিল।

জালিয়াতির মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া নিয়ে তখন নিবন্ধন দপ্তরসহ আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। কারণ মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। ওই সরকারের কর্মচারী হতে হলে তাদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে তাদের জন্মসাল হওয়া দরকার ১৯৫২ অথবা তার পূর্বে। কিন্তু নিয়োগ পাওয়াদের সবারই জন্ম তারিখ ছিল ১৯৫৩ সালের পরে। এর মধ্যে ১৩৮ জনের বয়সই ছিল ১০ বছরের নিচে। আর ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সালে জন্ম তারিখ আছে এমন সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৫ জন। মূলত ’৬৪ সালের পর যাদের জন্ম দেখানো হয়েছিল তাদের ৩৯ জনই এখন কর্মরত রয়েছেন এবং আগামী বছর তারা অবসরে যাবেন।

জানা যায়, ২০০৯ সালে মুজিবনগর কর্মচারীর কোটায় সাবরেজিস্ট্রারের চাকরি পাওয়ার আগে রামজীবন কুণ্ডু কুড়িগ্রামের রাজারহাটে একটি প্রাইভেট কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।)

হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্টে ভুল তথ্যের অভিযোগ, দুদকের সতর্ক বার্তা

ডাকসু নির্বাচন জুলাইয়ের পরে করার সুপারিশ প্রভোস্টদের

জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে ভুল ও যাচাইবিহীন তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের দাবি, ওই পোস্টে দুদকের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় দুদক।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি পোস্ট কমিশনের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন।

এ বিষয়ে সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে একটি প্রতারক চক্র দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের কথা বলে প্রতারণা করে আসছে। যার সাথে দুদকের কর্মকর্তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। দুদক ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং প্রতারক চক্রের অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এতে বলা হয়, ইতোপূর্বে দুদক প্রতারণা রোধে সবাইকে সতর্ক করে আসছে, যা বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরূপ প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুদককে দোষারোপ করে যার ফলে দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তির শেষ অংশ দুদক জানায়, প্রতারণামূলক ফোন কল, বার্তা বা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে কারও কাছ থেকে টাকা চাওয়া হলে কিংবা কোনো প্রতারণা বা অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেলে দুদকের টোল ফ্রি হটলাইন-১০৬ নম্বরে জানানোর অথবা নিকটস্থ দুদক কার্যালয় বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।