ইব্রাহিম খলিল প্রধান, বাংলারিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে দু’ছাত্রীকে যৌন হয়রানী,মানষিক নির্যাতন ও অনৈতিক কাজে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। ঘটনার সত্যতা পেয়ে রিপোর্ট পেশ করলেও আজ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রহন করেনি কোন ব্যবস্থা। ফলে ইংরেজী বিভাগের ওই শিক্ষক দীপক কুমার সরকার আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় ভুক্তভোগী ছাত্রীরা জীবনের নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। পাশাপাশি এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানিয়েছে, ইংরেজী বিভাগের লেভেল -৩ এর ছাত্রীরা লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগে উঠে এসেছে দীর্ঘদিন যাবত ওই শিক্ষক বিভিন্ন অযুহাতে ছাত্রীদের তার চেম্বারে ডেকে নিয়ে কু প্রস্তাব দেয়। বাধ্য করে অনৈতিক কাজে। প্রতিবাদ করলে মেরে ফেলার হুমকী পর্যন্ত দিয়েছে। কখনো মোবাইলে ম্যাসেস এর মাধ্যমে কুপ্রস্তাব দেয়। এসবে কাজে রাজী না হলে পরীক্ষায় ফেল করে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেয়। অভিযোগকারীদের মধ্যে একজন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আমি তাকে খুশী করার জন্য অনৈতিক এবং অসৎ কাজ করবো না। শিক্ষকের উত্তর ছিল কখনো কখনো ভালো কিছু পেতে হলে অনৈতিক এবং অসৎ কাজ করতে হয়।
এই শিক্ষক এধরনের ফাদ পেতে ৪ জন ছাত্রীকে যৌন হয়রানী করছে। এ কাজের জন্য উক্ত শিক্ষক বাশেঁর হাট এলাকায় রানীগঞ্জ মোড় হতে ১’শ গজ দুরে সাঁওতালদের কবরস্থনের পাশে একটি ঘর ভাড়া নেন। সকলের আড়ালে এখানে শিক্ষক দীপক কুমার সরকার অনৈতিক কর্মকান্ডের আখড়া গড়ে তুলেন। দিনের পর দিন এসব ঘটনা প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগিরা বিভাগীয় প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। ২০১৬ সালের ২২ ও ২৪ সেপ্টেম্বরে লিখিত অভিযোগের পর বিভাগীয় প্রধান ডীন ড. ফাহিমা খানম ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিষ্টারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পাঠান।
অভিযোগ তদন্ত এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সোস্যাল সায়েন্স এন্ড হিউম্যানিটিস অনুষদের ডীন ড. ফাহিমা খানমকে চেয়ারম্যান এবং সহকারী প্রফেসর শফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন এবং ৭ কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বলা হয়। কমিটির অন্যান্ন সদস্যরা হলেন, প্রফেসর ড, বলরাম রায়, প্রফেসর ড, এটিএম শফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ড, হারনুর রশিদ। তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষক্ষের কাছে জমা দেন।
এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব সহকারী প্রফেসর শফিকুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলারিপোর্টকে বলেন, ভিযোগের বিষয়গুলো সত্যতা পাওয়া গেছে বলে স্বীকার করেন।
ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে শিক্ষক দীপক কুমার সরকার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্জ প্রফেসর ড, মু আবুল কাসেম এর সঙ্গে যোগাযাগ করা হলে তিনি বাংলারিপোর্টকে বলেন, আমার যোগদানের আগে ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি অবহিত হবার পর তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
০৪-০৬-১৭-০০-৪০