অপূর্ব হাসান, বাংলারিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম
‘জিলাপির আড়াই প্যাঁচ’ বলে একটি কথা প্রচলিত আছে। এক সময় জিলাপিকে ‘আড়াই প্যাঁচ’ নামেই জানতো ও চিনতো সবাই। সাধারণত যে জিলাপি আমরা খেয়ে থাকি, তা আকারে ছোট এবং আড়াই প্যাঁচের হয়ে থাকে। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ক্যাম্পাসে বটতলার দোকানে এক বিশেষ ধরণের জিলাপি খেতে গেলে গুনতে হয় অনেকগুলো প্যাঁচ। জিলাপিটির নাম ‘ফুল জিলাপি’। কারো কাছে এটি ‘শাপলা ফুল’ কিংবা ‘১২ প্যাঁচের’ জিলাপি হিসেবেও পরিচিত। আর এই ১২ প্যাঁচের জিলাপি জাবি শিক্ষার্থীদের আড্ডার সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষঙ্গ।নপ্রতিদিন বিকেল থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত বটতলায় ৩/৪ টি দোকানে ১২ প্যাচেঁর জিলাপি খেতে শিক্ষার্থীদের উপচে ভীড় দেখা যায়। কারো চায় ২ জিলাপি ১ পেঁয়াজু ও ১ সিঙ্গারা, কেউ বলে মামা ৩ জিলাপি ২ পুরি, কেউ বলে ৫ জিলাপি ২ পুরি ১ পেঁয়াজু। এ রকম হাকডাকে সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত সরগরম থাকে বটতলার জিলাপির দোকানগুলো। জিলাপিটি খেতে গেলে দোকানে বসে অবশ্যই ১২ থেকে ১৫ টি প্যাঁচ গুণতে হয়। জিলাপি যত প্যাঁচেরই হোক না কেনো মচমচে জিলাপির স্বাদের কোনো জুড়ি নেই বলে জানালেন শিক্ষার্থীরা। প্যাঁচ ১২ কিংবা ১৫টি হলেও প্রতি পিস জিলাপির দাম মাত্র ১০ টাকা। রাত ১২টার পর থেকেই সিঙ্গারা-পুরির পাশাপাশি এই জিলাপির কদর বাড়ছে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের কাছে।
দোকানদারের ভাষ্যমতে, প্রত্যেকটি দোকানে প্রতি রাতে জিলাপি বিক্রয় হয় ২০০ থেকে ২৫০ পিস। শীতকালে এর কদর বেড়ে যায় আরো বেশি। শীতকালে বিক্রয় হয় ৫০০ থেকে ৬০০ পিস।
গরম মচমচে জিলাপি খাওয়ার জন্যে শীতকালে সিরিয়াল অনুযায়ী দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। জ্বাল দেওয়া মিষ্টির শিরা থেকে যখন গরম জিলাপি তোলা হয় তখন জিভে নিমিষেই জল এসে যায়।
৬ মাস আগে নোয়াখালী থেকে আসা জিলাপি কারিগর মো. লিটন জানান, এই ‘হুল জিলাপি’ তৈরি করতে গেলে তাকে বারো থেকে পনেরোটি প্যাঁচ ঘুরাতে হয়। তিনি এই জিলাপি বানানো শিখেছেন চট্টগ্রাম থেকে। তার ভাষ্যমতে, জিলাপি তৈরির উপাদান ময়দা, খাবার সোডা ও চিনির তৈরি শিরা।
২৫/৪/২০১৭/২৯০