মাহামুদ হাসান তাহের, বাংলারিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার ও চর আলগী ইউনিয়নে অসময়ে মেঘনা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত তিন সপ্তাহে চর আলেকজান্ডার ইউনিয়নের উত্তর সেবাগ্রাম, আসলপাড়া, বাংলাবাজার, মেস্তরীপাড়া ও বালুর চর এবং চর আলগী ইউনিয়নের উসখালী, মধ্য চরআলগী, দক্ষিণ চরআলগী এলকায় প্রায় ১০০ পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়ে পথে বসেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। যে হারে ভাঙন দেখা দিয়েছে তাতে আলেকজান্ডার ইউনিয়ন নিশ্চিহ্ন হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলাবাজার এলাকায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙন চলছে। সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকালে চর আলেকজান্ডার ইউনিয়নের আসলপাড়া গ্রামের লঞ্চঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, উকিল বাড়ির কবীর হোসেন, কাঞ্চন মাঝী, সালাউদ্দিন, আহমদ উল্লাহ ও নুরুল ইসলাম তাদের বসতঘরগুলো সরিয়ে নিচ্ছেন। একই এলাকার মুরাদবাড়ীর ৫টি ও পাটারিবাড়ীর ৭টি বসতভিটাও ভাঙনের মুখে রয়েছে। এ ঘরগুলোও সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বাংলাবাজার উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মো. সাহাবুউদ্দিন বলেন, বাজারের দক্ষিণ অংশের ১০টি দোকান ভেঙে গেছে। আরো শতাধিক দোকান ভাঙনের মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় অনেকেই দোকান সরিয়ে নিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, ঝোড়ো বাতাস আর উত্তাল ঢেউয়ের কারণে গত তিন সপ্তাহে আসলপাড়া লঞ্চঘাট থেকে বালুর চর জনতাবাজার সস্নুইস গেট পর্যন্ত মেঘনার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বাংলাবাজার এলাকার ২৫টি পরিবার মেঘনা নদীতে বিলীন হয়েছে। মেস্তরীপাড়ার আনোয়ার উল্লাহ শিকদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর গেছপার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বালুর চরের জনতাবাজার সস্নুইস গেট ভাঙনের মূখে রয়েছে। চর আলেকজান্ডার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আহামদ উল্লাহ (মজনু মাস্টার) বলেন, পাঁচটি গ্রামে ভাঙ্গন তীব্র। এভাবে চলতে থাকলে আগামী বর্ষার মধ্যে পাঁচটি গ্রাম বিলীন হয়ে যাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) লোকজন বারবার ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। ভাঙন প্রতিরোধের জন্য তাদের কাছে দাবিও জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
অন্যদিকে চর আলগী ইউনিয়নের উসখালী এলাকার পূর্ব চর আলগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের কবলে পড়েছে। মধ্য চর আলগী গ্রামের কারিমুল হক ও বেলাল উদ্দিন বলেন, উসখালী থেকে উত্তর সেবাগ্রাম পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় মেঘনার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে তাঁদের বসতভিটাসহ এলাকার আরও ১০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। তবে দুই ইউনিয়নের মেঘনার ভাঙন রোধে তাৎক্ষণিক পাউবোর কোনো উদ্যোগ নেই। এ বিষয়ে পাউবোর লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৩৭ কিলোমিটার এলাকায় মেঘনা নদীর ভাঙন প্রতিরোধের জন্য ‘নদীর তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্পের কাজ চলছে। এর আওতায় ঐ দুই ইউনিয়নে নদীর তীর সংরক্ষণে সিসি বস্নকের বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
১৮/৪/২০১৭/৪০/