স্টাফ রিপোর্টার ,বাংলারিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম
সাযযাদ কাদিরের কবিতায় আমাদের রাজনীতি উঠে এসেছে, উঠে এসেছে ছলাৎ নদীর তানময় অনবদ্য দেশপ্রেম-মননশীল প্রকৃতির নানান কথা। তিনি নিজের মতো করে অবিরত তৈরি করেছেন নিজস্ব কাব্যজগৎ। যেখানে তিনি ছিলেন রাজাধিরাজ। বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী দর্শক হিসেবে ব্যাপক আলোচিত ষাটের দশকে কাব্যজ জীবন গড়তে তৈরি হয়েছেন নিরলস পরিশ্রম-মেধা আর অভিজ্ঞতার আলোকে। তাঁর কবিতা সম্পর্কে ইতোমধ্যে অসংখ্য প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচিত হয়েছে। কবিতা অন্তপ্রাণ কবি হিসেবে বাংলা ভাষাভাষি স্বাধীনতার পক্ষের পাঠক- লেখক শ্রেণীতে তাঁর রয়েছে সর্বোচ্চ সম্মানের আসন।
সামনে রোদ্দুর শীর্ষক কবিতায় আমাদের মাটি-মানুষ-স্বপ্ন ও বাস্তবতার কবি সাযযাদ কাদির লিখেছেন, ছায়া কোথায়? হাত-পা ছড়িয়ে উদোম হয়ে/ রোদ্দুর শুয়ে আছে সবখানে।/ কাল রাতে বৃষ্টি ছিল, আজ একটু/ ছিঁটেফোঁটা নেই/ গাছের পাতায়।/ পলাতক সব মেঘ।/ হাওয়া-ও নেই আজ। তাই/ কোথায় পাবে একটু সি্নগ্ধময়তার ছোঁয়াছুঁয়ি?/ কিছুটা সুশীতল আরাম?/ এখানেই থাকো।/ একটু এগিয়ে আসো, আমি বেরিয়ে পড়ি।
এমন জীবনবোধের কথা বলা কবির সাথে পরিচয় একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে। তখন আমার প্রথম উপন্যাস ‘ডিভোর্স’ প্রকাশিত হয়েছে কেবলমাত্র। বর্তমানের লেখকদের মতো তখন আমাদের ফেসবুক বা টুইটার ছিল না। ছিল চিঠি, ডাক পিয়ন আর দূরালাপনির সুবিধা। তার উপর ভর করেই মানবজমিন কার্যালয়ে কবি সাযযাদ কাদিরের সাথে তৈরি হয়েছিল লেখালেখির সম্পর্ক। এই তো সেদিন, কবি রোকন জহুরের কাছ থেকে যখন জানতে পারলাম যে, বহুমাত্রিক লেখক, কবি, সাংবাদিক সাযযাদ কাদির আর নেই; ভেঙে গিয়েছিল দুপুরের খেয়াল। কবি সাযযাদ কাদির দীর্ঘকাল দৈনিক মানবজমিনের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। যতদূর জানি, তিনি ১৯৪৭ সালের ১৪ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলার মিরের বেতকা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা সাহিত্যের ষাটের দশকের অন্যতম কবি, গবেষক ও প্রাবন্ধিক হিসেবে পরিচিত। সাযযাদ কাদির ১৯৬২ সালে বিন্দুবাসিনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ১৯৬৯ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৭০ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭২ সালে তিনি টাঙ্গাইল করোটিয়ার সা’দত কলেজের বাংলা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৬ সালে তিনি কলেজের চাকরি ছেড়ে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় যোগদানের মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। মানবজমিন ছাড়াও দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে তিনি কাজ করেছেন রেডিও বেইজিং, দৈনিক সংবাদ, দিনকালে। সাযযাদ কাদির শুধু কবিতাই নয় গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ-গবেষণা, শিশুতোষ, সম্পাদনা, সঙ্কলন, অনুবাদসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৬০টির বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এতো এতো অর্জন নিয়ে এগিয়ে চলা কবি সাযযাদ কাদির সময়ের আলোয় আলোকিত ছিলেন সকল সময়। যে কারণে তাঁর কবিতায় আমাদের ঋতু বৈচিত্র্যের রূপও উঠে এসেছে ছন্দিত নন্দিতায়। বসন্তে একদিন শীর্ষক কবিতায় তিনি লিখেছেন, একবার এমনি এক বসন্তের দিনে/ লুশান-এর চূড়ায় উঠে উধাও নীলিমার দিকে তাকিয়ে/ আরেকবার হুয়াংশানের চূড়ায় দাঁড়িয়ে/ মনে হয়েছিল/ ঝাঁপ দিই মেঘের সমুদ্রে/ উড়ে যাই নিঃসীম অনন্তের বুকে!/ একবার ঠিক বুঝেছিলাম একটু পরেই বন্ধ হবে বুকের ধুকপুক/ তাই চোখ বুজে ছিলাম আগে থেকেই/ একবার মনকে বোঝানোর আশায়/ বিছানায় এ পাশ ও পাশ করেছি সারা রাত/ একবার জেনেশুনে পান করেছি যন্ত্রণাবিষ/ কাতর হয়েছি সয়ে-সয়ে শতেক জ্বালা/ একবার মুখ ফিরিয়ে তার চলে যাওয়ার পরও/ অপেক্ষায় থেকে নিয়েছি পরম প্রেমের স্বাদ/ আবার এক দিন কোনো কারণ ছাড়াই/ একাই হেসেছি, একাই গুনগুন করেছি গান/ একবার শুধু তাকেই বেসেছি ভালো যে বাসে না/ বাসবেও না কোনো দিন
ভালোবাসায়ও অকৃপণ নিবেদিত থেকে থেকে ক্রমশ সর্বস্বান্ত হওয়ার দলে তিনি ছিলেন বলেই জটলা পাকাতে দেখেছেন নিজস্ব অবস্থান থেকে। জটলা শীর্ষক কবিতায় তারই প্রমাণ উঠে এসেছে এভাবে- ওরা দু’জন। একজনের পরনে হলুদ-কমলা ছাপা শাড়ি।/ মেলায় যাওয়ার পথে এখানে ওখানে ছোটখাটো জটলা/ ওগুলো থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলে ওরা।/ এ নিয়ে কবিতা লেখার হয়তো কিছু নেই, তবে/ আমার মনে হয় শাড়ির আঁচলটা বারবার আঙুলে পেঁচিয়ে/ কি যেন ঠিক করে নেয় মহিলা। আর পুরুষটি/ হাত বাড়িয়ে তার কব্জিটা ধরে, কি যেন বলে কিছুক্ষণ।/ মহিলার হাত সাদা, খালি। পুরুষের চশমায় হঠাৎ/ ঝিকিয়ে ওঠে রোদ, তারই একটু ঝিলিক লাগে/ মহিলার নগ্ন ফরসা হাতে। ওদিকে জটলা বাড়ে পথে,/ শ’-শ’ নরনারী যায় আসে মেলায়। তবে ঐ দু’জন/ পড়ে না তাদের কারও চোখে। জটলার মধ্যে/ থাকে তারা জটলার বাইরে। বিচ্ছিন্ন। তারপর/ কোনো শূন্যতার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা/ মহিলার সাদা হাত, কব্জি ভেসে ওঠে হলুদ-কমলায়- দেখায়
বড় সৌন্দর্যম-িত। আমাদের চোখে ভাসে ভাসমান হাঁসের গ্রীবা।/ পুরুষটি বড় দুঃখী হয় ঐ সৌন্দর্য দেখে, অনুতাপ ঝরে/ তার কথায়। কি যেন বলে সে, মহিলাও বলে নতস্বরে।/ এভাবে নিজস্ব এক জটলা হয়ে ওঠে তারা দু’জন।
জটলা বাধুক কখনো কখনো কবিদের প্রত্যাশায় উঠে আসে। সেই কবিদের অন্যতম অভিভাবক ছিলেন কবি সাযযাদ কাদির। কবি হাসান হাফিজের সাথে আলাপ হলেই কোনো না কোনোভাবে তাঁর আগমন ঘটতো উদাহরণ হিসেবে। এমন কবির কবিতায় ‘জানালা বিষয়ক’ শিরোনাম আমাকে টেনে ধরেছিল ঠিক এভাবে- জানালা নিয়ে
তেমন কিছু বলেননি কেউ/ কোনো পরতুগিজ বা পারস্যবাসী কেউ।/ কবি বলতে ঐ নজরুল শুধু/ জানালার ও পাশে দেখেছেন/ সুপারি গাছ কয়েকটি, এছাড়া/ আই এম পেই বা/ আমাদের পাড়ার পানু মিস্ত্রি বা/ ও পাড়ার ছানা ছুতারের কাছে/ কখনো জানালা সম্পর্কে/ শোনা যায় নি কিছু।/ তবে আমি দেখেছি/ জানালার একটি মুখ কেমন বিহ্বল থাকে/ হৈমন্তী জ্যোৎস্না-কুয়াশায় মগ্ন/ আকাশের দিকে তাকিয়ে/ অন্য মুখ প্রায়ই নিজেকে লুকিয়ে রাখে/ নিষ্প্রদীপ-দুর্নীতিতে আক্রান্ত/ আমাদের ছোট-ছোট ঘরের দিকে।/ শীতের এখনো কিছু দেরি/ সারা দিন-রাত/ জানালার পরদা ওড়ে হাওয়ায়/ ধুলোবালি জমে টেবিলে-বইয়ে-কাপড়ে- কোলাহল আসে।
কোলাহল আসার আগেই নীরবতা এসেছে, না ফেরার দেশে চলে গেছেন কবি সাযযাদ কাদির। তবে বিনয়ের সাথে কিছু কাজ রেখে গেছেন। নতুন প্রজন্মের পক্ষ থেকে সেই কাজের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান জানাই। কবি ও প্রকাশক শরীফা বুলবুলের ভাষায় বলতে পারি, ‘এ শহর থেকে চলো সব দুঃখ নিয়ে যাই/এই ভাঙা অলি-গলি/উপচেপড়া নর্দমা-আবর্জনা/এই যানজট/ বিদ্যুৎবিভ্রাট/গ্যাস-পানির সংকট/বাজারে পাজারে পাগলা ঘোড়া/ফাটকাবাজারে নিঃস্ব আত্মহন্তা/এতোসব দুঃখ নিয়ে, চলো, এখনই চলে যাই। (আমার ভুলবাসা)।’ হ্যাঁ, সব দুঃখ নিয়েই না ফেরার দেশে চলে গেলেন ষাটের দশকের অন্যতম কবি, প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও সাংবাদিক সাযযাদ কাদির।
বাংলা একাডেমি তাকে কোনো সম্মান জানাতে পারেনি। সেই অসম্মানের আসনে বসেই তিনি পেয়েছিলেন, বাচসাস পুরস্কার (২০০২), এম নুরুল কাদের পুরস্কার (২০০৪), কবি বিষ্ণু দে পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত (২০১০), শৈবভারতী পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত (২০১৩)। অথচ তাঁর চেয়ে অনেক অথর্ব-অযোগ্যকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দিয়েছে। তিনি যে পুরস্কারের জন্য লেখেন নি; তার প্রমাণ পাওয়া যায় অনবদ্য কর্মকা-ে। বিশেষ করে কবিতার পঙতিতে পঙতিতে।
তাঁর প্রকাশিত বই- কবিতা : যথেচ্ছ ধ্রুপদ, রৌদ্রে প্রতিধ্বনি, দূরতমার কাছে, দরজার কাছে নদী, আমার প্রিয়, এই যে আমি, জানে না কেউ, বিশ্ববিহীন বিজনে, মণিমালা সিরিজ, বৃষ্টিবিলীন ও আমার ভুলবাসা। গল্প : চন্দনে মৃগপদচিহ্ন, অপর বেলায়, রসগল্প, গল্পসংগ্রহ। উপন্যাস : অন্তর্জাল, খেই, অনেক বছর পরে, জলপাহাড় : চার চমৎকার ও আঁচ। প্রবন্ধ-গবেষণা : ভাষাতত্ত্ব পরিচয়, হারেমের কাহিনি : জীবন ও যৌনতা, রবীন্দ্রনাথ : মানুষটি, রবীন্দ্রনাথ : শান্তিনিকেতন, বাংলা আমার, সহচিন্তন, বিচলিত বিবেচনা, চুপ! গণতন্ত্র চলছে, ম্যাঙ্গো পিপল উবাচ, সাহিত্য ও জীবনে রবীন্দ্র-নজরুল, শান্তি নিকেতন বিশ্বভারতী, রাজরূপসী, পৃথিবীর প্রিয়প্রণয়ী, নারীঘটিত, বরণীয় স্মরণীয়, রমণীমন, জানা-অজানা বাংলা। শিশুতোষ : তেপান্তর, মনপবন, রঙবাহার, বীরবল নামা, এফফেনতি, উপকথন, উপকথন আরও, উপকথন আবারও, উপকথন ফের, উপকথন তেপান্তর।
ভাষান্তর : লাভ স্টোরি (এরিক সিগাল), রসচৈনিক, বাংলার লোককথা, ফোক-টেলস অভ বেঙ্গল ও ইলিয়াড (হোমার)। স্মৃতিকথা : নানা রঙের দিন ও উদ্যত সঙ্গীনের নিচে। সম্পাদনা : শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা, এই সময়ের কবিতা, এই সময়ের কবিতা ২০১৪, এই সময়ের কবিতা ২০১৫, প্রেমপাঁচালি, ডা. লুৎফর রহমান রচনাবলি। আমাদের এতো এতো বই উপহার দিয়ে তিনি ঋণী করে গেছেন সারা জীবন। এমন কি ২০০৫-এ একবার তিনি বাংলা ভাষা চর্চা ও সংস্কৃতি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সংগঠনের উদ্যেগে গল্প প্রতিযোগিতারও আহ্বান জানান। সেই প্রতিযোগিতায় ভাগ্যক্রমে প্রথম হয়েছিলাম আমি। এতো এতো কাজের প্রতিদানে বাংলা একাডেমি তাকে কিছুই দিতে পারে নি কেবল অপেক্ষা ব্যতীত। তবু বলবো তিনি সবচেয়ে বড় পুরস্কার পেয়েছেন মানুষের ভালোবাসা। যে ভালোবাসার কারণে এই লেখার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে সতত সত্যের জমিন। কবি সাযযাদ কাদির শুধু কবিতাই নয়, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ-গবেষণা, শিশুতোষ, সম্পাদনা, সংকলন, অনুবাদসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৬০টিরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
‘দরজার কাছে নদী’ গ্রন্থটি তিনি নিজে আমাকে উপহার দিয়ে বলেছিলেন, ‘পড়লে কবিতার প্রতি ভালোবাসা বাড়বে।’ ভালোবাসা বেড়েছে কিনা জানি না। তবে এতটুকু জানি নতুন প্রজন্মের রাজনীতিক-শিক্ষা-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মী হিসেবে যতো ব্যস্তই থাকি না কেন সাহিত্য সাময়িকী আর সাহিত্য পত্রিকাগুলোর পাশাপাশি সাহিত্য-সমৃদ্ধ বই না পড়লে এখনো ঘুম আসে না। ‘সত্যিকারের মানুষ সাহিত্যিক হবে, অমানুষ নয়।’ সৈয়দ শামসুল হকের এই অনন্য উচ্চারণ কানে বাজছে এখন যখন কবি সাযযাদ কাদিরের ‘কবির আঙুলগুলো’ কবিতাটিতে চোখ রেখেছি- আমাদের ভাবনাগুলো কেমন- জানো?/ চারপাশের এই আলো, হাওয়া, পানির মতো!/ ওরা ঠিকই আমাদের ভেতর থেকে/ বাইরে যাওয়ার পথ খুঁজে নেয়/ তারপর সত্যি-সত্যি বেরিয়ে পড়ে/ ছড়িয়ে যায় এদিক-ওদিক।/ কি দিয়ে আটকে রাখবে?/ ঢুকিয়ে রাখবে খাঁচায়?/ উঁচু-উঁচু দেয়াল আর গরাদের মধ্যে?/ দাঁড় করাবে কাঠগড়ায়?/ কিন্তু মানুষ সবচেয়ে বড়, মানুষের অধিকারও।/ তাই দোর্দ- প্রতাপশালী মরে ভাগাড়ে,/ কল্লা যায় ঘাতক জল্লাদের।/ ইতিহাসের সব স্বৈরাচার, দেখো এখন,/ সময়ের পাদটীকা মাত্র।/ হাজার বছর ধরে বেঁচে আছে/ প্রতিটি কথা ও কবিতা-আর কেউ নেই, কিছু নেই।/ আছে কবি, আছে কবির সাক্ষ্য- দেখো ঐ/ মাটিতে আমানি খাওয়ার গর্ত/ শোনো ঐ শিশুর কান্না ওদনের/ তরে/ আরও শোনো/ দুধেভাতে সন্তানেরে বাঁচিয়ে রাখার আর্তি।/ তাহলে এই হাজার বছর শেষে/ জীবনের কোন পাড়ে আমরা এখন?/ এ এক বধ্যভূমি সামাজিক অবিচারের/ এখানে অর্থ আর অস্ত্রের অন্যায় শুধু।/ কবি? আছে। আমাদেরই একজন সে।/ এতো অপমান অসম্মান, এতো রক্তচক্ষু, তবুও/ তাকেই ভয় পায় প্রভুরা/ তার পথে-পথেই বসায় পাহারা।/ কিন্তু কবির আঙুলগুলোতে কতো শক্তি/ তার শব্দে বাক্যে কতো বিস্ফোরক/ কিছুই কখনও জানে নি ওরা।/ এখনো জানে না একদিন/ সব হুঙ্কার হুমকি তর্জন গর্জন মিইয়ে যাবে/ সব হামলার মোকাবিলা হবে/ সব হুকুমের হলকুম টিপে ধরবে মানুষ!/ এ পৃথিবীতে সত্য ও স্থায়ী শুধু জীবন/ আর জীবনের কবিতা…
১৬/৪/২০১৭/১০০/শা/ফা/