ডেস্ক রিপোর্ট ,বাংলারিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম
শিশুশ্রম আমাদের দেশের অন্যতম প্রধান সামাজিক সমস্যা। শিশুশ্রম শিশুদের মননশীলতা, শারীরিক এবং মানসিক ক্ষতি সাধন করে। মূলত দারিদ্র্যের কারণে শিশুকে শিশুশ্রমে নামতে হয়। তবে অভিভাবকের অসচেতনতাও এজন্য অনেকাংশে দায়ী। আমাদের দেশে শিশুশ্রম সবচেয়ে সস্তা, তাদের দিয়ে অনেক কম খরচে এবং সহজে কাজ করানো যায়। তাই মালিকপক্ষ এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। অনেক ধরনের কাজে শিশুদের পারিশ্রমিক না দিয়েও পার পেয়ে যায় মালিকপক্ষ। দরিদ্র পরিবারের শিশুরা নিজেকে এবং পরিবারকে বাঁচাতে মুখ বুজে সব সহ্য করে।দেশে মোট শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৭৯ লাখ, দিন দিন যা বেড়েই চলছে। আমাদের দেশে শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইন রয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে অনুসমর্থনকারী দেশ। সমস্যা হলো শিশুশ্রম বন্ধে আইনের সঠিক প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। আমরা আইন মান্য করার মানসিকতা গড়ে তুলতে পারিনি। এর কারণ হলো অসচেতনতা।রিবারের হাল ধরতে গিয়ে অনেক শিশুর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। অনেক পরিবারে প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করার আগেই তারা কাজে নিযুক্ত হয়। শ্রম দফতরের এক তথ্যে দেখা যায় প্রায় ৬৭ ভাগ শিশু তাদের বাবা-মার অনুরোধে শিশুশ্রমে বাধ্য হয়। এর ফলে তারা সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন শিশুর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়। কারণ আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিশুশ্রম পুরোপুরি নিরসন করা সহজ নয়। এ সমস্যা যেমন একদিনে সৃষ্টি হয়নি তেমনি নিরসনও রাতারাতি করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন পর্যায়ক্রমিক কার্যক্রম হাতে নেয়া। ঝুঁকিপূর্ণ কাজের কর্ম পরিবেশের মানোন্নয়ন ও আইনগত দিক সচিত্র বর্ণনাসহ পোস্টার, লিফলেট ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে সকলের মধ্যে তুলে ধরা; শিশুশ্রমের মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে অভিভাবকদের সচেতন করার জন্য গণমাধ্যমকে ব্যবহার করা; শিশুশ্রম নিরসন আইনের যথাযথ প্রয়োগ; যথোপযুক্ত মজুরি কাঠামো নির্ধারণ; শ্রম আইন অনুযায়ী ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করানো; প্রয়োজনে কর্মঘণ্টা কমিয়ে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা করা; নূ্যনতম ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া জানা- এ বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হবে।
৮/৪/২০১৭/১৩০/তৌ/আ/